লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা সীমান্তে বিএসএফে’র গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক হাসিনুর রহমান (২৫) মরদেহ অবশেষে ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পাটগ্রাম উপজেলার খারিজা জোংড়া সীমান্তে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে এই মরদেহ হস্তান্তর হয়।
বিএসএফে’র গুলিতে নিহত হাসিনুর হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের পশ্চিম ডাওয়াবাড়ী গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে। বুধবার দুপুরে তিনি কয়েকজনের সঙ্গে সীমান্তের ৮৯৪ নম্বর পিলারের কাছে ঘাস কাটতে গেলে বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করে তাদের ধাওয়া করে এবং গুলি ছোড়ে। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসিনুরকে তারা ভারতের ভেতরে নিয়ে যায় এবং পরে কোচবিহার জেলার এমজেএন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
প্রথম দফা পতাকা বৈঠকে বৃহস্পতিবার বিকালের মধ্যে হাসিনুর এর মরদেহ ফেরতের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি বিএসএফ। পরে সন্ধ্যায় বিজিবির কূটনৈতিক চাপ এবং পুনরায় যোগাযোগের ফলে রাত ১১টার দিকে ৬১ বিজিবি তিস্তা ব্যাটালিয়ন সীমান্ত পিলার ৮৮১/১৩ এস সংলগ্ন খারিজাজোংড়া এলাকায় দ্বিতীয় দফা বৈঠকে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। পতাকা বৈঠকে ভারতের ১৫৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের মহেশমারী ক্যাম্পের কমান্ডার রাজ কুমার, শীতলকুচি থানার ওসি এবং বাংলাদেশের ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সুবেদার রেজাউল ইসলামসহ উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
হাসিনুরের মরদেহ পৌঁছানোর পর তার গ্রামের বাড়ি কান্নায় ভেঙে পড়ে। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে গ্রামের পরিবেশ। রাত ১টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।
স্থানীয়রা জানায়, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি নিত্যদিনের শঙ্কা তৈরি করছে সীমান্ত অঞ্চলে। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছে।
পাটগ্রাম থানার ওসি আশরাফুজ্জামান সরকার বলেন, ভারতীয় পুলিশ ও বিএসএফ মরদেহ বাংলাদেশের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতের পরিবারকে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
হাতীবান্ধা থানার ওসি মাহমুদুন নবী জানান, বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।