খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) হামলার দুই মাস পূর্তিতে ক্যাম্পাসে ‘শোকের গ্রাফিতি এক দফার ডাক’ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বিকাল ৫টায় কুয়েট ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনে গ্রাফিতি এঁকে এই কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।
গ্রাফিতিতে শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, স্টেপ ডাউন মাছুদ, বাহ ভিসি চমৎকার সন্ত্রাসীদের পাহারাদার, ফ্রি প্যালেস্টাইনসহ নানা বক্তব্য তুলে ধরে। এছাড়াও গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের বিভিন্ন ফুটেজ প্রজেক্টরে প্রদর্শন করা হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাসে আঁকানো গ্রাফিতি প্রশাসন মুছে দেয়। এই কারণে তারা তাদের এক দফা দাবি কুয়েট ভিসির পদত্যাগের পক্ষে নানা গ্রাফিতি পুনরায় ক্যাম্পাসের দেওয়ালে তুলে ধরছেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, তারা এক দফা দাবিতে অনড়। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে তারা দেশবাসী ও প্রধান উপদেষ্টার নিকট তুলে ধরতে চান যে কুয়েটে ছাত্ররা ভালো নেই।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে বহিরাগত ও ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কুয়েট ভিসি, প্রো ভিসি, ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ ও ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসের একাডেমিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে ছাত্রদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় কুয়েট কর্তৃপক্ষ। পরে ১৩ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা জোর করে ক্যাম্পাসের প্রবেশে করে হল খোলার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে।
এরপর গত ১৫ এপ্রিল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ ছাত্রকে বহিষ্কার এবং আগামী ২ মে হল খুলে দেওয়া ও ৪ মে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত দেয় সিন্ডিকেট সভা। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে গত ১৬ এপ্রিল ৬টি আবাসিক হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ছাত্ররা। অপরদিকে, শিক্ষার্থীদের উপচার্যের অপসারণের এক দফা দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এছাড়া ১৮ ফেব্রুয়ারি ঘটে যাওয়ার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে না ফেরার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন কুয়েট শিক্ষক সমিতির নেতারা।