শরীয়তপুরের নড়িয়া পৌর এলাকায় বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। রবিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বুলবুল এ আদেশ জারি করেছেন।
নড়িয়া উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের নড়িয়া বাঁধের বিপরীত পাশে পদ্মা নদীতে চরে ১০ কোটি ঘনফুট বালু নিলামে দেয় উপজেলা প্রশাসন। যার মূল্য নির্ধারণ করা হয় চার কোটি ৯০ লাখ টাকা। গত ৬ এপ্রিল থেকে ড্রেজার যন্ত্র দিয়ে বালু কাটা শুরু করে ঠিকাদার নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ রয়েল।
কিন্তু বিএনপির আরেকটি পক্ষ কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি কর্নেল (অব.) এসএম ফয়সাল এই বালু কাটার বিপক্ষে। এর আগেও তারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কর্মসূচি করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় রবিবার সকাল ১০টার দিকে নড়িয়া উপজেলা চত্বরে ফরিদ আহমেদ রয়েলের নেতৃত্বে বালু কাটার পক্ষে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন।
অন্যদিকে, প্রতিবাদে বালু কাটা বন্ধে একই স্থানে সকাল সাড়ে ১০টায় কর্নেল (অব.) এসএম ফয়সাল, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ জিন্টু, কলাবাগান থানা মহিলা দলের সভাপতি শামিমা জাহান সাথীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন। একই স্থানে বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে সংঘর্ষ ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে নড়িয়া উপজেলা প্রশাসন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ জিন্টু বলেন, নড়িয়া বাঁধের বিপরীতে পদ্মা নদীতে একটি কুচক্রী মহল অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু কেটে বিক্রি করছেন। যেখানে উপজেলা প্রশাসনও জড়িত। এই বালু কাটার ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে নড়িয়া বাঁধ। তাই আমাদের একটাই দাবি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু কাটা বন্ধ করতে হবে। আর যদি নদীতে বালু কাটা বন্ধ না হয়, তাহলে আগামীতে আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ রয়েল বলেন, সরকারিভাবে একটি টেন্ডার হয়েছে। সেই টেন্ডারে আমরা অনেকেই অংশগ্রহণ করি। সেখানে আমি নির্বাচিত হই। পরে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বালু কাটা কাজ শুরু করি। যা সম্পূর্ণ বৈধ।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, নড়িয়া পৌরসভা এরিয়ায় বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে সংঘর্ষ ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছি। রবিবার সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এই জারি বলবৎ থাকবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পৌর এলাকায় শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে।
তিনি বলেন, নদীর তলদেশ থেকে বালু মাটি কাটা যাবে না। কেউ যদি বালু কাটে তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে সরকারিভাবে বালু নিলামে দেওয়া হয়েছে। তা হলো ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল অপসারণ করার জন্য। কিন্তু নদীর তলদেশ থেকে বালু মাটি কাটার জন্য না।