এক নারীর ওপর সহিংস আচরণের দোষী সাব্যস্ত হয়ে চার বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন সাবেক অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেটার ও টিভি উপস্থাপক মাইকেল স্ল্যাটার। তবে তবে আপাতত স্থগিত থাকছে শাস্তি, ৫ বছরের মধ্যে এ ধরনের অপরাধ করলে জেলে যেতে হবে তাঁকে। ইতোমধ্যে ৩৭৫ দিন জেলে থাকার পর মঙ্গলবার তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
৫৫ বছর বয়সী স্ল্যাটারের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ার নুসা অঞ্চলে এক নারীকে আক্রমণ, গলা টিপে ধরা, গৃহচুরি ও পিছু নেয়ার একাধিক অভিযোগ ওঠে।
রুচিডোর জেলা আদালতে জানানো হয়, স্ল্যাটারের অপরাধমূলক আচরণের পেছনে মদ্যপানের প্রবণতা একটি বড় কারণ হিসেবে বারবার উঠে এসেছে। আদালতে ভুক্তভোগী নারী জানান, স্লেটারের কারণে তিনি “চরম আতঙ্কিত ও বিরক্ত” অনুভব করতেন। তিনি প্রতিদিন শতাধিক, অনেক সময় গালিগালাজপূর্ণ মেসেজ পাঠাতেন।
বিচারক গ্লেন ক্যাশ রায় ঘোষণার সময় স্ল্যাটারকে উদ্দেশ করে বলেন, “এটা স্পষ্ট যে, আপনি একজন মদ্যপ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এই আসক্তিই আপনার পেশাগত জীবনের ইতি টেনেছে। পুনর্বাসনের পথ সহজ হবে না, কারণ মদ্যপান এখন আপনার ব্যক্তিত্বের অংশ।”
আদালতে স্লেটার চুপচাপ ছিলেন। তাঁর আইনজীবী গ্রেগ ম্যাগুইর দাবি করেন, শ্বাসরোধের ঘটনাটি খুব গুরুতর ছিল না এবং তাঁর মক্কেল মদ্যপান না করায় আদালতে “শান্ত, সুস্পষ্ট ও অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ” আচরণ করেছেন। তিনি বলেন, “তিনি নিউ সাউথ ওয়েলস ফিরে যেতে চান, যেখানে তাঁর পরিবার রয়েছে। তিনি গত এক বছর ধরে মদের সংস্পর্শে নেই।”
সরকারি কৌঁসুলি অ্যালেক্স স্টার্ক বলেন, স্ল্যাটারের জন্য পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং তিন বছরের মাথায় প্যারোলে মুক্তি প্রযোজ্য হতে পারে। তবে বিচারক স্ল্যাটারের আগাম স্বীকারোক্তিকে “সহযোগিতা ও অনুশোচনার নিদর্শন” হিসেবে বিবেচনা করে চার বছরের কারাদণ্ড দেন, যার একটি অংশ পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।অর্থাৎ, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে তিনি যদি আর কোনো গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পড়েন, তাহলে তাঁকে পূর্ণ সাজা ভোগের জন্য আবার জেলে পাঠানো হতে পারে।
স্ল্যাটার ১৯৯৩-২০০১ ৭৪টি টেস্ট খেলেছেন, যেখানে তিনি ১৪টি সেঞ্চুরিতে ৫,০০০ রানের বেশি সংগ্রহ করেন। এছাড়া তিনি ৪২টি ওয়ানডে ম্যাচও খেলেছেন। ২০০৪ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি ধারাভাষ্যকার জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।