ফেনীর সোনাগাজীতে আবুল হাসেম নামের এক বিএনপিকর্মীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে পূর্বশত্রুতার জেরে খুন ও পঙ্গু করার বদলা নিতে ১০ জন মিলে এ হত্যা মিশন পরিচালনা করেন বলে স্বীকার করেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমা তুজ জোহরা মুনা ও অপরাজিতা দাশের আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার মামলার প্রধান আসামি আক্তার হোসেন, ১১ নম্বর আসামি রাকিবুল ইসলাম, তদন্তে শনাক্ত আসামি বেলায়েত হোসেন মামুন ও সোলেমান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে আসামিরা জানান, কয়েক মাস পরিকল্পনার পর ২২ এপ্রিল রাত আড়াইটার দিকে তারা বোরকা ও মাস্ক পরে ওলামা বাজার সংলগ্ন সাজেদা ফাউন্ডেশনের পেছনে অবস্থান নিয়ে হত্যার মিশন বাস্তবায়নে প্রস্তুতি নেন। সেদিন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নিহত হাসেম ওই সড়ক অতিক্রম করবে বলে তথ্য পান তারা। সে সময় তারা সড়কের দুই পাশের বৈদ্যুতিক পিলারে রশি দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। নিহত হাসেম ঘটনাস্থলে পৌঁছা মাত্রই তাকে পরে রড, লাঠি ও ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে শরীর থেকে হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে তাকে হত্যা করা হয়। স্বীকারোক্তি প্রদানকারী সোলেমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও মূল সড়ক এড়িয়ে হত্যাকারীরা যাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারে সেটির ব্যবস্থা করেন এবং ওলামাবাজারে অবস্থান নিয়ে নিহত হাসেমের গতিবিধির তথ্য হত্যাকারীদের কাছে সরবরাহ করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক হাসান বলেন, পূর্বশত্রুতা, বেলাল হত্যা মামলায় হাসেমের সংশ্লিষ্টতা ও স্থানীয় সুফিয়ান মেম্বারকে পঙ্গু করার ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই তারা এ হত্যার পরিকল্পনা করেছেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বায়েজীদ আকন বলেন, এ মামলায় ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারসহ চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্য তিনজন এখনও জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।