নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের পটুয়াখালী জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান বাদল। ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানে হাসিনা সকারের পতনের পর থেকেই রয়েছেন আত্মগোপনে। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গত বুধবার রাতে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলে ধরেন। ৭ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের লাইভে দলের প্রভাবশালী নেতাদের উদ্দেশে নানা অভিযোগ করেন মেহেদী হাসান। গতকাল শুক্রবার দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত ওই লাইভ ১১ হাজার বার দেখা হয়েছে। মেহেদী হাসানের এই লাইভকে ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ফেসবুকে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করে মেহেদী হাসান বাদল বলেন, ‘ছাত্রলীগের ছোট ছোট নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, আর আওয়ামী লীগের বড় নেতারা বাসায় ঘুমাচ্ছেন। বড় বড় আওয়ামী লীগ নেতা, যারা শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন, তারা শহরে ঘুরছেন, বাড়িতে ঘুমাচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই, বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর নেই। কিন্তু ছাত্রলীগের সাধারণ নেতাকর্মীদের ওপরই সব চাপ। আমরা ইনকাম তো দূরের কথা, উল্টো দল করার জন্য টাকা খরচ করেছি।’
৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে তাদের খোঁজ রাখছে না কেউ। এমন অভিযোগ করে মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা হামলা-ভাঙচুরের শিকার হয়েছি। মামলার আসামি হয়েছি। অথচ যারা মূল নেতা তাদের কোনো ক্ষতি হয়নি। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ এবং আমার বাড়িতে একাধিকবার হামলা হয়েছে।’
ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান অভিযোগ করে বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক ভিপি আবদুল মান্নান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন শহরের বাসায় বা ঢাকার ফ্ল্যাটে নিরাপদে আছেন। যারা তাদের পরিচালনা করেছেন, সেসব নেতারাও পটুয়াখালী শহরের বাসা ও ঢাকার ফ্ল্যাটে নিরাপদে বসবাস করছেন। আমরা যারা মাঠে ছিলাম তারা হামলার শিকার হয়েছি। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান আরিফ ও আমার বাসায় একাধিকবার হামলা হয়েছে। অথচ জেলা যুবলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, শ্রমিক লীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অনেক নেতার বাড়িতে কোনো ধরনের হামলা-ভাঙচুর হয়নি।
মেহেদী হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ৫ আগস্টের আগে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের কোনো রকম ক্ষতি করিনি, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল।’
মেহেদীর লাইভে স্থানীয় শ্রমিক লীগ নেতা মিঠু হাওলাদার মন্তব্য করেন, ‘পৃথিবীটা ছোট, এর হিসাব হবে ইনশাআল্লাহ।’ মইনুল ইসলাম মন্তব্য করেন, ‘এক পয়সাও ইনকাম করিনি, করার সুযোগও পাইনি, তারপরেও বাড়ি ছাড়া।’
মেহেদী হাসানের অভিযোগ নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার প্রতিক্রিয়া জানার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল করা হলেও কেউ সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে।’