চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) জায়গা অবৈধভাবে দখল করে দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বসত বাড়ি ও ভবন নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। সরকারি কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রতিনিয়ত এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
অপরদিকে অদৃশ্য কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কোনো প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ১৪ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১৭ হাজার হেক্টর জমি রয়েছে। এ সকল জমির একটি বড় অংশ প্রভাবশালীরা যে যার মত করে দখল করে পাকা ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছে। আবার অনেকে বালু, মাটি দিয়ে ভরাট করে রাতারাতি বহুতলা পাকা স্থাপনা গড়ে তুলেছে। বছরের পর বছর অতিবাহিত হলেও বেদখল এসব সম্পত্তি উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন উদ্যোগ নেই।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার ছেঙ্গারচর বাজার, নতুন বাজার, চরমাছুয়া বাজার, জনতা বাজার, একলাশপুর বাজার, মোহনপুর বাজার, ষাটনল বেড়ীবাঁধ, নন্দলালপুর বাজার, সাহেব বাজার, বেলতলী বাজার, বাগান বাড়ি বাজার, সুজাতপুর বাজার, টরকী বেড়ীবাঁধ, চরপাথালিয়া বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য স্থাপনা। প্রভাবশালী মহল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা গড়ে তুলেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রহস্যজনক কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসবের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এ বিষয়ে দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের
হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
বাংলাদেশ জাতীয় বাদী দল বিএনপির নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ডক্টর জালাল উদ্দিন বলেন , ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারি জায়গা দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ করেছে। আমাদের দল এ সমস্ত দখলদারিত্ব সমর্থন করে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব অবৈধ স্থাপনার উপর অভিযান চালিয়ে দখল মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
চাঁদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হুদা বলেন, আইন কানুন না মেনে সরকারি জায়গা দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করায় সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। তাই আমি এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ দখলদারদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম সাহেদ জমি দখলের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের তালিকা করে সংশ্নিষ্ট প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছেন, শীঘ্রই এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হবে।