মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

কৃষককে হত্যার ঘটনায় এক মাসেও গ্রেপ্তার হয়নি অধিকাংশ আসামি

আপডেট : ০৩ মে ২০২৫, ০৭:৫৫ পিএম

বাকেরগঞ্জে তরমুজ চাষি কৃষক কুদ্দুস হাওলাদারকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার আসামিদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার, বাদী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা এবং মামলার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলার দিয়ার চর গ্রামের নিহত কৃষকের স্ত্রী আকলিমা আক্তার। শনিবার (৩ মে) বেলা সাড়ে ১২টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে মায়ের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মেয়ে সাদিয়া আক্তার (১৬)।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নিহত কুদ্দুস হাওলাদার ছিলেন একজন কৃষক। তিনি অন্যের জমিতে বর্গাচাষ করতেন। চলতি বছর তিনি নিজের বসতবাড়ির পাশে ৫০ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করেন, যার দেখাশোনা করতেন তিনি ও তার স্ত্রী দু’জনে মিলে।

গত ৩ এপ্রিল দুপুরে ক্ষেত থেকে তরমুজ চুরি করে নিয়ে যায় ৯ জন নামীয় এবং ৪-৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি। অভিযুক্তরা হলেন—১) মো. আনোয়ার হোসেন চৌকিদার (৩২), পিতা-মতিউর রহমান মানিক মাস্টার; ২) সানি (২০), পিতা-মৃত সুলতান চৌকিদার; ৩) মো. ফয়সাল চৌকিদার (২৮); ৪) হিরণ চৌকিদার (১৯); ৫) মাসুদ চৌকিদার (৩২), সর্ব পিতা-হারুন চৌকিদার; ৬) মিরাজ মোল্লা (২৯), পিতা-আলাউদ্দিন মোল্লা; ৭) সরোয়ার চৌকিদার (২৩), পিতা-মতিউর রহমান মানিক মাস্টার; ৮) মতিউর রহমান মানিক মাস্টার (৬৩), পিতা-মৃত আফতার আলী চৌকিদার; এবং ৯) হারুন চৌকিদার (৫৫), পিতা-মৃত নজর আলী চৌকিদার। এদের সবার ঠিকানা—মধ্য চরাদী, বিলামঘাট, ৩ নম্বর ওয়ার্ড, ২ নম্বর চরাদী ইউনিয়ন, থানা-বাকেরগঞ্জ, জেলা-বরিশাল।

তরমুজ নিয়ে যাওয়ার সময় কুদ্দুস হাওলাদার বাধা দিলে অভিযুক্তরা তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে ৪ এপ্রিল রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে বাকেরগঞ্জ থানায় ৪ এপ্রিল একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, এক মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশ অধিকাংশ আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। কেবলমাত্র অন্য একটি মামলার সূত্র ধরে অভিযুক্ত সানি জেলহাজতে রয়েছেন। বাকি আসামিরা মামলা তুলে নিতে বাদীকে নিয়মিত হুমকি দিচ্ছে। এমনকি লোকমুখে শোনা যাচ্ছে, মামলা না তুললে পরিবারে ‘বংশে প্রদীপ জ্বালানোর মতো কেউ থাকবে না।’

এদিকে বাদীর পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে। ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন আকলিমা আক্তার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নিহত হওয়ায় তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাকেরগঞ্জ থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো. এনামুল হক বলেন, ‘হত্যা মামলার মাস্টারমাইন্ড সানি গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে আছে এবং ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কেউ পার পাবে না। প্রযুক্তির সহায়তায় সবার গতিবিধির ওপর নজর রাখা হচ্ছে।’

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত