সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

২১ আগস্ট হামলা মামলায় পরবর্তী শুনানি ২৬ মে

আপডেট : ১৫ মে ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আপিল বিভাগের পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী ২৬ মে। 

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত আপিল বেঞ্চ শুনানি শেষে এ দিন নির্ধারণ করেন।

এর আগে, সকালে মামলার সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে শুনানি শুরু হয়। প্রথমে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি গ্রহণ করেন আদালত।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দেন। ডেথ রেফারেন্স খারিজ করে এবং আসামিদের আপিল মঞ্জুর করে দেওয়া হয় এ রায়।

রায়ে বলা হয়, কেবল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে অপর আসামিদের শাস্তি দেওয়া যায় না। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ওপর নির্ভর করে ষড়যন্ত্রও প্রমাণ হয় না। মামলার দ্বিতীয় চার্জশিট আইনানুগ নয়, কারণ সেটি শুধু মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতেই প্রস্তাবিত হয়েছিল, যা ‘১৯১বি’ ধারার আওতায় প্রযোজ্য নয়।

আদালতে লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টুসহ দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও মোহাম্মদ শিশির মনির। রায়ের পর আইনজীবী শাহজাহান বলেন, মুফতি হান্নানের প্রথম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতেই প্রথম চার্জশিট গঠিত হয়। সেই জবানবন্দির বাইরেও কোনো আলাদা তথ্য-প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করা যায়নি।

তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় চার্জশিটে যাঁদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে—যেমন তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবর—তাঁদের বিরুদ্ধেও কেবল মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তির বাইরে আর কোনো প্রমাণ ছিল না। অথচ মুফতি হান্নান জীবিত অবস্থায় তাঁর দেওয়া দুইটি জবানবন্দিই প্রত্যাহার করেছিলেন। কাজেই প্রত্যাহার করা জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে কারও সাজা হওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। এমনকি যিনি জবানবন্দি দিয়েছেন, তিনি বেঁচে থাকলেও তাঁকে শাস্তি দেওয়া যেত না।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতা-কর্মী প্রাণ হারান। ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা দায়ের হয়।

২০১৮ সালে বিচারিক আদালত মামলাগুলোর রায় ঘোষণা করে। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আরও ১৯ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। রায় ঘোষণার পর মামলার সম্পূর্ণ নথিপত্র হাইকোর্টে পাঠানো হয়।

পরে কারাবন্দি আসামিরা পৃথকভাবে জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল দায়ের করেন। ২০২২ সালে আপিল শুনানি শুরু হলেও বিচারক বেঞ্চ ভেঙে যাওয়ায় শুনানি শেষ করা যায়নি। ফলে নতুন বেঞ্চ গঠনের মাধ্যমে পুনরায় শুনানি শুরু হয়।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত