বৈশি^ক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, জ¦ালানিসংকট, ডলারের অস্থিরতা ও এলডিসি উত্তরণ-উত্তর বাণিজ্য বাস্তবতায় বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত পোশাক শিল্প নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বলে দাবি করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনে সম্মিলিত পরিষদ প্যানেলের মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তারা এ দাবি করেন। আগামী ২১ মে সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করা হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশান এলাকার হোটেল ওয়েস্টিনে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, প্যানেল লিডার ও চৈতী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম এবং বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক ফারুক হাসান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্প্যারো অ্যাপারেলস লিমিটেডের কর্ণধার মুস্তাজিরুল শোভন ইসলাম।
সম্মিলিত পরিষদের প্রতিনিধিরা বলেন, এই পরিষদ শুধু ভোটের সময় দৃশ্যমান হয় না, বরং গত দুই দশকে যখনই বিজিএমইএর দরকার পড়েছে সংকট কিংবা সম্ভাবনার সময়, তখনই সংগঠনের পাশে থেকেছেন তারা। বক্তারা বলেন, ‘আমরা শুধু ইশতেহার দিই না, আমরা কাজের মধ্য দিয়ে আমাদের দায়িত্ব পালন করি।’
আবুল কালাম বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী চরম প্রতিযোগিতার এ সময় প্রয়োজন অভিজ্ঞ নেতৃত্ব ও গভীর বোঝাপড়ার। আমরা বিজিএমইএকে এমন এক আধুনিক ও সেবাকেন্দ্রিক সংগঠনে রূপ দিতে চাই, যেখানে সদস্যদের প্রয়োজনই হবে নীতিনির্ধারণের মূল ভিত্তি।’
ইশতেহার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাদের ঘোষণাপত্রে বিজিএমইএর ডিজিটাল রূপান্তর; সদস্যদের জন্য ওয়ানস্টপ সার্ভিস; নবীন উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা; এসএমই কারখানাগুলোর টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা; নবায়নযোগ্য জ¦ালানির (সোলার) ব্যবহার বাড়ানো এবং মেড ইন বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিংকে জোরদারের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে।’
সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা অতীতে যেভাবে সংকটে বিজিএমইএকে নেতৃত্ব দিয়েছি, ভবিষ্যতেও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। এই সংগঠন শুধু পোশাক রপ্তানিকারকদের নয়, এটি দেশের অর্থনীতির মেরুদ-। তাই এর নেতৃত্বে দায়িত্ববান, পরীক্ষিত ও কার্যকর লোকের প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বারবার প্রমাণ করেছি, সংকটে আমরা সামনে থাকি। আমরা কথা নয়, কাজ দিয়ে নেতৃত্ব দিই। এই পরিষদ ২০ বছর ধরে বিজিএমইএর আস্থার প্রতীক হয়ে আছে।’
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পরিষদের নেতারা বলেন, ‘আমরা কাদা ছোড়াছুড়ির রাজনীতি করি না। আমাদের দায়িত্ব দায়িত্বশীলভাবে সদস্যদের পাশে থাকা, তাদের দাবিকে শক্ত কণ্ঠে সরকার ও আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরা।’ তারা আরও বলেন, ‘বিজিএমইএ নির্বাচনে যারা এবার প্রথম ভোট দেবেন, সেই তরুণ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আমরা ভবিষ্যতের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে চাই।’
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক শোভন ইসলাম তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ‘এই নির্বাচন শুধু নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ নয়, বরং এটি এমন একসময়, যখন সঠিক মানুষকে দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমেই আমরা বিজিএমইএকে নতুন যুগে প্রবেশ করাতে পারি।’
সম্মিলিত পরিষদের পক্ষ থেকে সব সদস্যকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের এবং ভবিষ্যতের গতিশীল নেতৃত্ব গঠনে মতামত জানানোর আহ্বান জানানো হয়।