শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

এবার আমিরাতের কাছেও সিরিজ হার

আপডেট : ২২ মে ২০২৫, ০৭:৪৭ এএম

টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার পর লেজের লড়াইয়ে আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী টি-টোয়েন্টিতে সম্মানজনক সংগ্রহ বাংলাদেশের। জাকের আলী অনিকের ৪১, তানজিদ হাসান তামিমের ৪০ আর হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলামের শেষ সময়ের ক্যামিওতে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬২ রান করে লাভ হয়নি। শারজার ব্যাটিং স্বর্গে তা ৭ উইকেট হাতে রেখে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে স্বাগতিকরা।

শারজায় আমিরাতের মতো সহযোগী দেশের বিপক্ষে আগের ম্যাচে হারার লজ্জা সঙ্গী করে শেষ ম্যাচে সিরিজ বাঁচানোর দায় ছিল লিটন দাসদের কাঁধে। সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে হারের ফলে শেষ ম্যাচটি হয়ে ওঠে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এই সিরিজটি নির্ধারিত ছিল দুই ম্যাচের। দুই বোর্ডের বোঝাপড়ায় আরও একটি ম্যাচ বাড়ে সিরিজে। আগের ম্যাচে হারে সেই শেষ ম্যাচটিই হয়ে ওঠে বাংলাদেশের মান বাঁচানোর অনুষঙ্গ। বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করেছিলেন বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম। তাকে ভুল প্রমাণ করতেই বোধহয় ব্যাটসম্যানরা মাতলেন আত্মাহুতির খেলায়।

সেঞ্চুরি, বাদ এবং শূন্য, এই হচ্ছে আমিরাত সফরে পারভেজ ইমনের রোজনামচা। তানজিদ তামিম ছিলেন আগ্রাসী, কোনো সিঙ্গেল বা ডাবল ছাড়াই সমান ৪ ছক্কা ও ৪ বাউন্ডারিতে ১৮ বলে ৪০ রান করে বিদায় নিয়েছেন। বামহাতি স্পিনারের বলে আগে থেকেই সুইপ খেলব ভেবে রাখা লিটন হয়েছেন লেগ বিফোর উইকেট। একই বোলারকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে মারতে গিয়ে রানের খাতা খোলার আগেই আউট তাওহীদ হৃদয়ও। সারা বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে গ-ায় গ-ায় বামহাতি স্পিনারদের খেলেও এখনো তারা উইকেট দেন বামহাতি স্পিনারকে!

৫৭ রানে নেই ৫ উইকেট, ৭১ রানে পৌঁছাতে ৭। ইনিংসের তখন ১১তম ওভার চলে। একশর নিচে অলআউট হওয়ার আশঙ্কা তখন প্রবল, কোনোমতে কুড়ি ওভার পর্যন্ত খেলে সম্মান বাঁচানোই তখন আসল লক্ষ্য। প্রথম দুই ম্যাচে যখন ব্যাটিংয়ে নামেন শামীম হোসেন, তখন বল বাকি ছিল হাতেগোনা। এবার তো অর্ধেকের বেশি ইনিংসই বাকি। অফসাইডের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে আউট হয়েছেন ১২ বলে ৯ রান করে। সহঅধিনায়ক শেখ মেহেদি হাসান প্রথম ম্যাচে বল হাতে দিয়েছেন ৫৫ আর ব্যাটিংয়ে করেছিলেন দুই রান। দ্বিতীয় ম্যাচে বাদ পড়ে শেষ ম্যাচে ফিরে এসেও তার দুই রান। আগেরবার ৫ বলে আর এবার ৯ বলে। হেলমেটে বলের আঘাত পেয়ে, বারবার ফিজিওর সেবাযত্ন শেষে কই মাছের প্রাণ নিয়ে লড়াই চালিয়ে গেছেন জাকের আলী অনিক। ৩৪ বলে ৪১ রান করেছেন জাকের, এক বাউন্ডারি আর তিন ছক্কায়। তবে রানটার মূল্য অঙ্কের চেয়ে বেশি। তানজিম হাসান সাকিবকে নিয়েই বেশি ব্যাট করেছেন, স্ট্রাইক আগলে রেখেছেন, অসুস্থতা নিয়ে খেলেছেন। সেই লড়াইটাও থেমেছে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে।

জাকেরের বিদায়ের পর চমৎকার দুটো ক্যামিও এসেছে দুই পেসারের ব্যাট থেকে। ১৫ বলে ২৬ রান হাসান মাহমুদের, তাতে তিনটি চারের মার। আরেক প্রান্তে শরিফুল ইসলামের ৭ বলে ১৬, একটা করে চার ও ছক্কা। দুই বোলারের ছোট তবে কার্যকর দুটো ইনিংসের কল্যাণেই বাংলাদেশের রানটা দেড়শ ছাড়িয়েছে, বোলাররা পেয়েছে লড়াইয়ের পুঁজি। ২০ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান হয়েছে ৯ উইকেটে ১৬২ রান। আমিরাতের বামহাতি স্পিনার হায়দার আলি নিয়েছেন তিন উইকেট। জোড়া শিকার ধরেছেন মতিউল্লাহ খান ও সগির হোসেন। অবশ্য শারজার উইকেটের মতো ব্যাটিং স্বর্গ এবং একই সঙ্গে অধিনায়ক লিটন দাসের কথামাফিক শিশির বিবেচনায় এই রানকে পুঁজি বলতে পারাটা দুরূহ।

রানতাড়ায় নামা আমিরাতকে প্রথম ঝটকা দেন শরিফুল। মাত্র ৯ রানেই থামিয়ে দেন আমিরাত অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিমকে। এরপর তানজিম আর রিশাদের আঘাতে পড়ে আরও দুই উইকেট। ওই শেষ, আসিফ খান ও আলিশান শারাফুর ব্যাটে লড়ে বাকি পথ পাড়ি দেয় আমিরাত। ২৬ বলে ৫ ছক্কায় ৪১ রান করেন আসিফ। আর আমিরাতকে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের উপলক্ষ এনে দেওয়া শারাফু খেলেন ৪৭ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৮ রানের অপরাজিত আলিশান ইনিংস।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত