রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

সন্ধ্যা নদীর ভাঙনে দুশ্চিন্তায় উজিরপুরের মানুষ

আপডেট : ০২ জুন ২০২৫, ০৮:৫৯ পিএম

এক সময় একরের পর একর ছিল ফসলের জমি, পাকা ছিল বসতভিটা। পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখের সংসার ছিল বরিশালের উজিরপুর উপজেলার নরকেলী গ্রামের সুলতান মৃধার। সন্ধ্যা নদী তার সব তছনছ করে দিয়েছে। এখন তিনি প্রায় নিঃস্ব। তার মতো প্রতিবেশী আলাউদ্দিন মৃধার ২০ শতাংশ জমির ওপর ছিল বসতবাড়ি। সন্ধ্যা নদীর ভাঙন আলাউদ্দিনের পরিবারকেও পথে নামিয়েছে।

একই গ্রামের বাসিন্দা গনি মৃধা, সরোয়ার মৃধা নদীভাঙনে সব হারিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। বড়াকোঠা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুলাতান মৃধার পুত্র প্রবাসী বাবুল মৃধার প্রবাস জীবনের আয়ের অর্থ দিয়ে একটি পাকা ভবন নির্মাণ করেছিলেন। রবিবার রাতে তার বসতভবনটি নদীর মধ্যে চলে যায়। তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, পান্নি উন্নয়ন বোর্ড কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় তার স্বপ্ন এখন নদীগর্ভে।

বড়াকোঠা ইউনিয়নের ৪টি গ্রামের শত শত পরিবার নদীভাঙনের কবলে পড়ে সব হারিয়ে পথের ফকির। প্রতি বছর উজিরপুর উপজেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে কোনও না কোনও গ্রাম। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই সন্ধ্যা নদী তার সেই ভাঙনের রূপ ধারণ করায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নদী পারের মানুষ।

নারকেলী গ্রামের একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, সরকার নদীভাঙন রোধে পদক্ষেপ নিতে বিলম্ব করায় গ্রামটি প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।

চলতি বছর নদী ভাঙনের বসতভিটা বিলীন হওয়া মায়া রানী বলেন, মুহূর্তের মধ্যেই তার বসতবাড়িটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি এখন অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।

বড়াকোঠা ইউনিয়ন জামাতে ইসলামী বাংলাদেশ সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, নদী ভাঙনে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষ আতঙ্কে দিন পার করছেন।

উজিরপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সন্ধ্যা নদী ভাঙন রোধে আন্দোলনের নেতা এস এম আলাউদ্দিন  জানিয়েছেন, কয়েক বছর ধরে সন্ধ্যা নদীর ভাঙনে সড়ক-ফসলের জমিসহ উজিরপুরের বড়াকোঠা ইউনিয়নের একাংশ হারিয়ে গেছে।

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের উজিররপুর উপজেলা শাখা আমির আব্দুল খালেক জানিয়েছেন, চলতি বছর নদী ভাঙনের কবলে পড়া বরাকোঠা ইউনিয়নের নারকেলী গ্রামের ১০টি পরিবারকে দলের পক্ষ থেকে অর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে।

উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলী সুজা বলেন, সন্ধ্যা নদীর ভাঙনের কবলে উজিরপুরের বিভিন্ন জনপদ। তিনি নদী ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন মহলে জানিয়েছেন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত