আহমেদাবাদের আলো ঝলমলে রাতে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকল ক্রিকেটবিশ্ব। ১৮ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা, হাজারো স্বপ্নভঙ্গ আর অগণিত সমালোচনার মাঝে অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত আইপিএল শিরোপা। ক্যামেরা এক জায়গায় আটকে গেল—দুই কিংবদন্তি, বিরাট কোহলি আর এবি ডি ভিলিয়ার্স। একজনের চোখে অশ্রু, অন্যজনের মুখে গর্বিত হাসি। এ যেন ক্রিকেট-ঈশ্বরেরই সাজানো চিত্রনাট্য।
ভাঙা গলায় বিরাট কোহলি অ্যাংকর ম্যাথু হেইডেনকে বললেন, “এই জয়টা আমাদের দলের জন্য যেমন, ঠিক ততটাই আমাদের ফ্যানদের জন্যও। ১৮ বছর… দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে আমি চেষ্টা করেছি। আমার তারুণ্য, আমার স্বর্ণসময়, আমার অভিজ্ঞতা—সব কিছু এই দলের জন্য দিয়েছি। প্রতিটা মৌসুমে স্বপ্ন দেখেছি। কখনো ভেঙে পড়িনি। আজ যখন শেষ বলটা হলো, নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি।”
তিনি আরও বললেন, “এবি ডি ভিলিয়ার্সের অবদান এই ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য অসীম। আমি ওকে বলেছি, ‘এই জয় তোমারও, আমাদেরই মতো করে। তুমি আমাদের সঙ্গে উদযাপন করো।’ সে চার বছর আগে অবসর নিয়েছে, কিন্তু এখনও যেন প্রতিটি ম্যাচে সে-ই ম্যাচ উইনার। এই ট্রফিতে তার স্পর্শ আছে, তার আবেগ আছে।”
এই জয়ের পেছনে ছিল বিশ্বাস, ছিল অটল অঙ্গীকার, “অনেক সময় মনে হয়েছে দল বদলাই। কিন্তু না—আমার হৃদয়, আমার আত্মা ব্যাঙ্গালোরের সঙ্গেই জুড়ে গেছে। যতদিন আইপিএল খেলবো, এই দলের হয়েই খেলবো,” বললেন কোহলি।
“আজ রাতে আমি একটা বাচ্চার মতো ঘুমাবো। সময় সীমিত—আর বেশি বছর খেলতে পারবো না। যতটুকু সময় আছে, সব দিয়ে দিতে চাই। ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ যে অবশেষে এই ট্রফিটা আমার কোলে তুলে দিলেন।”
এই জয় তাঁর ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মুহূর্ত—তবুও তাঁর মতে, “এখনও সেটা টেস্ট ক্রিকেটের চেয়ে পাঁচ ধাপ নিচে।”
“সম্মান পেতে চাইলে, টেস্ট ক্রিকেট খেলো,” বললেন সেই মানুষটি, যিনি নিজেই ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সম্মানিত নাম।