নড়াইলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় যুগ্ম সদস্য সচিব ও জেলা ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. আব্দুর রহমান মেহেদী, যুগ্ম-সদস্য সচিব আমিরুল ইসলাম ও সদর উপজেলা আহ্বায়ক মো. রাশেদুল ইসলাম মামুনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন সংগঠনটির জেলা ইউনিট।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) নড়াইল জেলা শাখার মুখপাত্র নুসরাত জাহান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। জেলা শাখার সদস্যসচিব মো. শাফায়াত উল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক কাজী ইয়াজুর রহমান বাবুর নির্দেশক্রমে এ নোটিশ জারি করা হয়।
শোকজে বলা হয়, গত ৯ জুন অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে নড়াইল জেলা ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. আব্দুর রহমান মেহেদী ও যুগ্ম সদস্য সচিব আমিরুল ইসলাম রানাকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব না দিলে কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে পারে।
এ ছাড়া সংঘর্ষে জড়িত সদর উপজেলা আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম মামুনকে কেন সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তা জানতে চেয়ে আগামী ৭ দিনের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব প্রদান ব্যতীত তার সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৬ জুন সংগঠনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. আব্দুর রহমান মেহেদী নড়াইল জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহানের উদ্দেশ্যে একটি সমালোচনামূলক পোস্ট করেন। পোস্টে জুলাইয়ের শহিদ, আহত ও সাধারণ মানুষের প্রতি জেলা প্রশাসককে আরও যত্নবান হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। পোস্টটি সংগঠনের আরেক যুগ্ম সদস্য সচিব আমিরুল ইসলাম রানা ডিলিট করে দেন এবং মেহেদীকে তিরস্কার করেন।
এ নিয়ে সংগঠনের মেসেঞ্জার গ্রুপে দুজনের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়। ৮ জুন সংগঠনের সিনিয়র নেতারা উভয় নেতাকে ডেকে বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নিলেও তারা কেউ সাড়া দেননি। উপরন্তু তারা উভয়ই মেসেঞ্জারে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতে থাকে এবং দুই গ্রুপে মারামারি করার জন্য স্থান ও সময় নির্ধারণ করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ জুন বিকেলে শহরের পুরাতন বাস টার্মিনালে দুইপক্ষের অনুসারীরা পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেন। এ সময় আমিরুল ইসলাম রানা ও সদর উপজেলা আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম মামুনের অনুসারীদের সাথে আব্দুর রহমান মেহেদীর অনুসারীর হাতাহাতি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জেলা আহবায়ক মেহেদীসহ তার গ্রুপের ৩ জন এবং উপজেলা আহ্বায়ক মামুনসহ তার গ্রুপের ৩ জন আহত হয়।
জেলা সংগঠক মিনহাজুল ইসলাম বলেন, অদক্ষ, অথর্ব ও অযোগ্য ব্যক্তিরা সংগঠনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ কুক্ষিগত করে রেখেছে। সংঘর্ষ ও আহতের ঘটনা অনাকাঙ্খিত। হানাহানিতে কেউ লাভবান না হলেও সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ বিষয়ে সংগঠনটির সদস্য সচিব মো. শাফায়াত উল্লাহ বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জুলাই বিপ্লবের প্লাটফর্ম। এখানে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের ঘটনা ভীষণ হতাশাজনক। শোকজের জবাবের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’