বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ নামে প্যানেলের আত্মপ্রকাশ

আপডেট : ২০ জুন ২০২৫, ০৫:০৮ এএম

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) নির্বাচনে অংশ নিতে ‘বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ’ নামে একটি প্যানেল আত্মপ্রকাশ করেছে। এই প্যানেল থেকে সভাপতি পদে জাকির হোসেন নয়ন এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে এ প্যানেল থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেওয়া হয়। প্যানেল সভাপতি হিসেবে যিনি নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি বাংলাদেশ সিএনজি মেশিনারিজ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের পক্ষ থেকে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি ও পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা আবুল কাশেম সভাপতির নাম প্রস্তাব করেন। এ সময় অন্য সদস্যরা এ প্রস্তাবে সমর্থন দেন। শিগগিরই বাকি প্রার্থীদের নামসহ পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

গত ১৮ জুন এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন বোর্ড তফসিল ঘোষণা করে। তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় এফবিসিসিআই নির্বাচনে সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি, সহসভাপতি ও পরিচালক পদে সরাসরি ভোট হবে। এবার পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন হবে বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা ২০২৫ অনুসারে। যেখানে উল্লিখিত সবগুলো পদেই সরাসরি ভোটের কথা বলা হয়েছে। নতুন এই বিধিমালা অনুযায়ী, তাতে পরিচালনা পর্ষদের আকার ৮০ থেকে কমিয়ে ৪৬ জনে আনা হয়েছে।

প্যানেল সভাপতি হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে জাকির হোসেন নয়ন বলেন, ‘বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় সভাপতি নির্বাচিত হতো রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। সে সময় সাধারণ ভোটারের তেমন মূল্য ছিল না। বিরোধী মতের কেউ নির্বাচন করতে চাইলে তাকে নানা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হতো। ফেডারেশনে ঢুকতে দেওয়া হতো না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন সংস্কার হওয়ায় এই চর্চা থাকবে না। সবাইকে সাধারণ ব্যবসায়ীদের ভোটে আসতে হবে। এতে ব্যবসায়ীদের মূল্যায়ন করতে হবে। তাদের কাছে যেতে হবে। রাজনৈতিক প্রভুদের কাছে না গেলেও সমস্যা নেই। ব্যবসায়ীদের সমস্যা সমাধান না করলে তারা ভোট দেবে না।’

নয়ন বলেন, ‘আমি মাঝারি খাতের ব্যবসায়ী। এর আগে মাঝারি খাতের ব্যবসায়ীরা নমিনেশন তোলার সাহসই পেতেন না। একটি বিশেষ স্থান থেকে ওহি নাজিলের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হতো। ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃত্বের কোনো অভিজ্ঞতা না থাকলেও ওই ওহি নাজিলের কারণে দুর্বল চেম্বারের নেতাকেও সভাপতি বানানো হয়েছে এবং যারা ব্যবসায়ীদের স্বার্থ অগ্রাধিকার না দিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থকে বিবেচনায় নিত, এবার এটিকে রহিত করা হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে নিজের প্যানেলের কিছু ইশতেহার তুলে ধরেন জাকির হোসেন নয়ন। তিনি বলেন, ‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হলে আরএমজি খাতের রপ্তানি কমে যাবে ৮ বিলিয়ন ডলার। এর বিপরীতে রপ্তানির বৈচিত্র্যায়ণ না হলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কাক্সিক্ষত মাত্রায় পৌঁছাবে না। এজন্য আমরা চারকোল, মাছের আঁশের মতো খাতগুলো আধুনিকায়ন করার চেষ্টা করব। তা ছাড়া পোশাক রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতে হালাল পোশাক প্রস্তুতে জোর দিতে হবে। এতে অপ্রচলিত বাজার একদিকে বাড়বে, অন্যদিকে রপ্তানিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।’

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের মিডিয়া ও লিয়াজোঁ কমিটির চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ থেকে আমরা এই বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালাকে স্বাগত জানাই। ৩১ বছর পর ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুসারে একটি যুগোপযোগী বিধি প্রণয়ন আগামী প্রজন্মের কাছে মাইলফলক হয়ে থাকবে। এই বিধি আগামী দিনগুলোয় এফবিসিসিআইসহ দেশের সব বাণিজ্য সংগঠনগুলো দখলদারমুক্ত হয়ে স্বকীয়তা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সাড়ে ৩ কোটি ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে। এতে এফবিসিসিআইসহ সব বাণিজ্য সংগঠনে পরপর দুবার পরিচালক নির্বাচিত হলে বাধ্যতামূলকভাবে একবার বিরতি দিতে হবে, যাকে আমরা স্বাগত জানাই।’

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক গিয়াস উদ্দীন খোকন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের সদস্য সচিব জাকির হোসেন, সদস্য বেলায়েত হোসেন, আনিসুর রহমান বাদশাসহ অনেকে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত