শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

একই দলে ভারতের কিষান, পাকিস্তানের আব্বাস

আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম

রাজনীতির মাঠে শত্রুতা, ক্রিকেট মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা—এই সূত্র ধরেই ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের পরিচিতি। তবে দুই দেশের ক্রিকেটারকে একসঙ্গে একই ড্রেসিংরুমে দেখা গেলেও, তা খুবই বিরল ঘটনা। সেই বিরল তালিকায় এবার যোগ হয়েছেন ইশান কিষান ও মোহাম্মদ আব্বাস। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে নটিংহ্যামশায়ারের হয়ে একসঙ্গে মাঠে নেমেছেন এই দুইজন, যা মনে করিয়ে দেয় অতীতের আরও কিছু ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

১৯৭০-এর দশকে নর্থহ্যাম্পটনশায়ারে একসঙ্গে খেলেছেন ভারতের বিশ্বখ্যাত বাঁহাতি স্পিনার বিষণ সিং বেদি ও পাকিস্তানের মুশতাক মোহাম্মদ। মুশতাক তখন কাউন্টির সিনিয়র খেলোয়াড়, আর বেদি যোগ দিয়েছিলেন ১৯৭২ সালে। দুজনই পরে নিজ নিজ দেশের টেস্ট অধিনায়ক হন। এ সময় একই দলে ছিলেন পাকিস্তানি পেসার সারফরাজ নওয়াজও। তার ‘রিভার্স সুইং’ প্রথম নজরে আনেন ইংলিশ ক্রিকেটার রজার প্রাইডক্স, যিনি ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান সফরে নেট সেশনেই তার প্রতিভা দেখে বিস্মিত হন।

নর্থহ্যাম্পটনে ১৯৮১-৮২ মৌসুমে খেলেন ভারতের কপিল দেব, তবে সারফরাজের সঙ্গে একাদশে একসঙ্গে মাঠে নামার সুযোগ হয়নি। ২০০৩ সালেও এমন ঘটনা ঘটেছে—ডার্বিশায়ারে মোহাম্মদ কাইফ ও শহীদ আফ্রিদি এবং ডারহামে জাভাগাল শ্রীনাথ ও শোয়েব আখতার ছিলেন একই দলে, কিন্তু মাঠ ভাগাভাগির সুযোগ হয়নি।

২০০০-এর দশকে এমন ঘটনা আরও কিছু দেখা গেছে। ২০০৪ সালে সারে দলে এক ম্যাচ খেলেন জাহির খান, সঙ্গে ছিলেন আজহার মাহমুদ। পরের বছর হরভজন সিংও একই দলে খেলেন আজহার ও মোহাম্মদ আকরামের সঙ্গে, যদিও একসঙ্গে তিনজনকে দেখা যায়নি। ২০০৬ সালে সারে দলে ছিলেন অনিল কুম্বলে, আজহার ও আকরামের সঙ্গে তিন ম্যাচে খেলেন।

সবচেয়ে আলোচিত উদাহরণগুলোর একটি ২০২২ সালে—সাসেক্সে এক দলে খেলেন চেতেশ্বর পূজারা ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। সেই মৌসুমে পূজারা করেছিলেন ১,০৯৪ রান, যা আবার ফিরিয়ে আনে তাকে ভারতের টেস্ট দলে।

২০২৫ সালের মৌসুমে নটিংহ্যামশায়ারে দেখা মিলেছে ইশান কিষান ও মোহাম্মদ আব্বাসের। আব্বাস হ্যাম্পশায়ার ছেড়ে এখানে যোগ দিয়েছেন, আর কিষান নিজেকে জাতীয় দলের আলোচনায় রাখতে চাইছেন।

এর বাইরেও সাসেক্সে পিয়ূষ চাওলা-ইয়াসির আরাফাত (২০০৯), সারেতে প্রজ্ঞান ওঝা-ইয়াসির (২০১১), লেস্টারশায়ারে বরুণ অ্যারন-আব্বাস (২০১৮), সাসেক্সে বিজয়-আজহার/বাবর (২০১৯), ল্যাঙ্কাশায়ারে সুন্দর-হাসান আলী (২০২২), মিডলসেক্সে উমেশ-শাহীন (২০২২) ও ইয়র্কশায়ারে ঋতুরাজ গায়কোয়াড়-আবদুল্লাহ শফিক (২০২৫) একই দলে খেলেছেন।

রাজনীতির সীমান্ত পেরিয়ে মাঠে যখন দুই দেশের ক্রিকেটার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামেন, তখন বোঝা যায়—ক্রিকেট শুধু খেলা নয়, বন্ধনের সেতুও হতে পারে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত