তদবিরে পদোন্নতি পুলিশে!
সরোয়ার আলম | ১৩ জুন, ২০২২ ০০:০০
সম্প্রতি অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) থেকে ডিআইজি পদে পদোন্নতি নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, যারা তদবির করতে পেরেছেন, তারাই পদোন্নতি পেয়েছেন। আবার রাজনৈতিক বিবেচনার কারণে যোগ্যতা থাকার পরও কেউ কেউ পদোন্নতি পাননি।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পুলিশ ক্যাডারের সপ্তম ব্যাচ থেকে ২৭তম ব্যাচ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, শতাধিক কর্মকর্তা পদোন্নতি পাননি। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) মেধা অনুসারে পুলিশে পদোন্নতি হচ্ছে না। জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের ঘটনাও রয়েছে।
গত মঙ্গলবার ৪৬ জন পুলিশ সুপারকে (এসপি) অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এর আগে অতিরিক্ত ডিআইজি থেকে ডিআইজি হয়েছেন ৩২ জন।
পুলিশ সূত্র জানায়, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) থেকে অতিরিক্ত ডিআইজি পর্যন্ত পদোন্নতি হয় বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির (ডিপিসি) মাধ্যমে। ডিপিসির প্রধান হন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব। ডিআইজি থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পর্যন্ত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হয় সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) মাধ্যমে। পদাধিকার বলে এসএসবির প্রধান থাকেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। আর নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের (কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর) পদোন্নতি হয় পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে। পদাধিকার বলে প্রধান থাকেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, সবাই পদোন্নতি পাবেন না। নিচের ধাপের তুলনায় ওপরের ধাপে পদের সংখ্যা কম। তিনি বলেন, ‘পুলিশে যাদের যোগ্যতা আছে, তারাই পদোন্নতি পাচ্ছেন। পদোন্নতি দেওয়ার আগে সবার আমলনামা যাচাই-বাছাই করা হয়। কোনো তদবিরে কাজ হয় না। যারা পাচ্ছেন না, তাদের নিশ্চয় আমলনামা ভালো না। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে যে তালিকা আসে তা গভীরে গিয়ে দেখি আমরা। কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব করা হয় না।’
পুলিশে পদোন্নতির ক্ষেত্রে পিএসসির মেধাক্রম, কর্মদক্ষতা, আচরণ, বিভাগীয় মামলা, দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ এসব বিষয় বিবেচনা করা হয়। তবে এসব মানদ-ের বাইরে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হয়।
পুলিশ ক্যাডারে মঞ্জুরিকৃত পদ আছে এএসপি ১২২২, অতিরিক্ত এসপি ১০০১, এসপি ৫৯৩, অতিরিক্ত ডিআইজি ২৪৬, ডিআইজি ১১৭ ও অতিরিক্ত আইজিপি ২২টি।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দেশ রূপান্তরকে জানান, বিসিএস সপ্তম ব্যাচে পাঁচজন কর্মকর্তার মধ্যে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ ও অতিরিক্ত আইজিপি ড. মইনুর রহমান চৌধূরী কর্মরত আছেন। আরেকজন মোহাম্মদ নাজিবুর রহমান অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি পেয়ে গত বছর অবসরে গেছেন। বাকি দুজন এখনো ডিআইজি হিসেবে কর্মরত আছেন। তারা হলেন মুহাম্মদ মাহবুব মহসীন ও হেলাল উদ্দিন বদরী। দীর্ঘদিন ধরেই তারা এই পদে আছেন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) কর্মরত এই দুজন কর্মকর্তা কিছুদিন পরেই অবসরে যাবেন।
অষ্টম ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যে কর্মরত আছেন ১৩ জন। তাদের মধ্যে অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন পিএসসির মেধাক্রমে ২, ৫, ৯, ১০, ১১ ও ১৩ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা। বাকিদের পদোন্নতি হয়নি। তাদের মধ্যে আছেন ডিআইজি একজন, অতিরিক্ত ডিআইজি চারজন ও পুলিশ সুপার (এসপি) দুজন। কয়েক মাস আগে পদোন্নতি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে অবসরে গেছেন দুই কর্মকর্তা। এ ব্যাচের অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তার চাকরির মেয়াদ চুক্তির ভিত্তিতে এক বছর বাড়ানো হয়েছে।
এসপি পদে থেকে কিছুদিন আগে অবসরে যাওয়া অষ্টম ব্যাচের কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান দেশ রূপান্তরকে জানান, পদোন্নতি পেতে নানাভাবে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। একই ব্যাচের পদোন্নতিবঞ্চিত হাবিবুর রহমান বলেন, ‘অনেক কষ্ট নিয়ে কিছুদিন আগে অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে অবসরে গিয়েছি। এই ব্যাচে অনেকেই পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত আইজিপি হয়েছেন। পিএসসির মেধাতালিকায় আমার স্থান এক নম্বরে। অথচ আমার পদোন্নতি হয়নি। কী কারণে পদোন্নতি হলো না, তা আজও জানতে পারলাম না।’ তিনি আরও বলেন, ‘পদোন্নতি না হওয়ায় আর্থিক দিক থেকে বঞ্চিত হয়েছি, সামাজিকভাবে হেয় হয়েছি আর বিভাগের লোকজনের কাছে ছোট হয়েছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে হাবিবুর রহমান দাবি করেন, ‘পুলিশে নানা গ্রুপিং আছে। আমার কাছে মনে হয়, গ্রুপিংয়ের কারণে পদোন্নতি থেকে অনেককেই বঞ্চিত হতে হচ্ছে। এই গ্রুপিং ভেঙে দিতে হবে। যোগ্যতার পাশাপাশি মেধাবী ও মেধানুসারে পদোন্নতি দিলে পুলিশের জন্যই মঙ্গল।’
অষ্টম ব্যাচের আরেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল্লাহেল বাকী ডিআইজি হিসেবে অবসরে গেছেন। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পদোন্নতি কেন হয়নি তা বলতে পারব না। এতে আমার কোনো দুঃখ নেই। পুলিশের প্রতিটি সদস্যই দেশপ্রেমিক। দেশের জন্য সবাই কাজ করেন। এই বিবেচনা থেকে কারও যদি পদোন্নতি না হয়, তা খুবই দুঃখজনক।’
১২তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ৩১ জন। তাদের মধ্যে অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি পেয়েছেন পিএসসির মেধাক্রমে ৩, ৬, ৮, ১০, ১১, ১৩, ১৫, ২৩, ২৫, ২৬ ও ২৮ নম্বরের কর্মকর্তারা। এখনো ডিআইজি হিসেবে আছেন ৮ জন, অতিরিক্ত ডিআইজি ৮ ও এসপি ২ জন। দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি মিজানুর রহমান এই ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি বরখাস্ত হয়েছেন এবং এখন কারাগারে আছেন। তা ছাড়া একজন অতিরিক্ত ডিআইজিকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
১৫তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ৬৬ জন। এর মধ্যে অতিরিক্ত আইজিপি (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন মেধাতালিকায় ১, ৩, ৮, ১১ ও ২৪ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা। এখনো এসপি ২৯, অতিরিক্ত ডিআইজি ১৯ ও ডিআইজি পদে ১৩ জন কর্মরত আছেন।
১৭তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ৪৯ জন। তাদের মধ্যে ডিআইজি পদে পদোন্নতি পেয়েছেন মেধাতালিকার ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৪, ১৭, ১৮, ১৯, ২২, ৩০, ৩২, ৩৪, ৩৫, ৩৭, ৪১, ৪৪ ও ৪৭ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা। এই ব্যাচের ১৭ জন এখনো এসপি পদমর্যাদার কর্মকর্তা আছেন (একজন চলতি দায়িত্ব), একজন ডিআইজি উচ্চ আদালতের আদেশে পদোন্নতি পেয়েছেন। অতিরিক্ত ডিআইজি আছেন ১১ জন।
১৮তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ৫৫ জন। এর মধ্যে ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন মেধাক্রমের ১, ৬, ৭, ৮, ১১, ১২, ১৪, ১৬, ১৮, ১৯, ২২, ২৪, ২৬, ২৭, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৪, ৩৮, ৪০, ৪১, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৫৩, ৫৪ নম্বর কর্মকর্তা। এই ব্যাচের ১৩ জন এখনো এসপি পদমর্যাদায় কর্মরত। এ ছাড়া অতিরিক্ত এসপি একজন ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদে ১৩ জন রয়েছেন।
২০তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ১০৬ জন। তাদের মধ্যে পদোন্নতি পেয়েছেন মেধাতালিকায় ৪, ৯, ১০, ১৩, ১৪, ১৭, ২০, ২৬, ৩৩, ৪২, ৫৬, ৬৪, ৭৬ ও ৮৪ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা। এখনো অতিরিক্ত এসপি ৪, এসপি ৬২ ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদে রয়েছেন ২২ জন।
২১তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ৪৯ জন। তাদের মধ্যে এসপি পদে পদোন্নতি পাননি পিএসসির মেধাক্রমের ৮, ১৬, ৩৬ ও ৩৭ নম্বরধারীরা।
২২তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ৪২ জন। তাদের মধ্যে এসপি পদে পদোন্নতি পাননি মেধাক্রমের ১০ ও ২৭ নম্বরধারী কর্মকর্তারা।
২৪তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ২০১ জন। তাদের মধ্যে এসপি পদে পদোন্নতি পাননি মেধাতালিকায় ২৫, ৩১, ৪০, ৪১, ৪৫, ৭৩, ৭৫, ৮০, ৮১, ৮৮, ১০৪, ১২৫, ১৩৮, ১৩২ ও ১৬৬ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা।
২৫তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ১৯২ জন। তাদের মধ্যে এসপি পদে যেতে পারেননি মেধাক্রমে ৭, ২৩, ২৫, ৩৬, ৪৮, ৫৮, ৬৩, ৭৯, ১০৯, ১১২, ১১৯, ১২৭, ১৩১, ১৫০, ১৫৪, ১৭৮, ১৮৬, ১৯০ ও ১৯২ নম্বরের কর্মকর্তারা।
২৭তম ব্যাচে কর্মরত আছেন ১৩৭ জন। তাদের মধ্যে এসপি পদে পদোন্নতি পেয়েছেন মেধাতালিকার ১, ৫, ৬, ৮, ৯, ১০, ১১, ১৩, ১৬, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ৩০, ৩২, ৩৩, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৪০, ৪১, ৪২, ৪৫, ৪৬, ৪৮, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৮, ৫৯, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৭, ৬৮, ৬৯, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪, ৭৫, ৭৭, ৭৮, ৮১, ৮২, ৮৪ ও ৮৫ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা। এরপর আর কোনো ব্যাচের এসপি পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হয়নি।
বিসিএস ১২তম ব্যাচের এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, যারা তাকে স্যার বলতেন, তারা পদোন্নতি পেয়ে ওপরে চলে গেছেন। এখন আর তাকে স্যার বলেন না, তিনিও তুমি সম্বোধন করেন না। কোনো সম্বোধন ছাড়াই দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যান। তদবির করার লোক না থাকায় হয়তো তার পদোন্নতি হচ্ছে না বলে মনে করছেন তিনি।
পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তার অভিযোগ, প্রতিটি সরকারের আমলেই তদবিরের পাশাপাশি রাজনৈতিক বিবেচনায় পদোন্নতি হয়। এই কর্মকর্তার দাবি, নিয়মের বাইরে গিয়ে এখন পদোন্নতি হচ্ছে।
২ জুন এসপি থেকে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে ৭৩ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এখানেও পিএসসির মেধাক্রম অনুসরণ করা হয়নি। ২১তম ব্যাচের ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৯, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৫, ২৬, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৮, ৩৯, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭ ও ৪৮ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়েছেন।
২২তম ব্যাচের ১, ৩, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১১, ১২, ১৩, ১৫, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২২, ২৩, ২৪, ২৬, ২৮, ২৯, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৮, ৩৯, ৪১ ও ৪২ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়েছেন। তা ছাড়া ২৪তম ব্যাচের ১, ৩, ৪, ৫, ৭ ও ৮ নম্বর থাকা কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়েছেন।
এই পদোন্নতির বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, পদোন্নতিপ্রাপ্তদের মধ্যে কারও কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। তারপরও তদবির করে কেউ কেউ পদোন্নতি পেয়ে গেছেন।
অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, পুলিশ একটি বড় বাহিনী। এই বাহিনীর পদোন্নতি নীতিমালা মানা খুবই প্রয়োজন। নীতিমালা মানলে পদোন্নতির সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড থাকবে, যখন-তখন জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটবে না।
তবে সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পুলিশে পদোন্নতির আগে প্রতিটি কর্তকর্তার বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশ সদর দপ্তরের গোপন প্রতিবেদন আমলে নেওয়া হয়। যাদের আমলনামা ভালো, তারা পদোন্নতি পাচ্ছেন। পুলিশে চাকরি করেন অথচ গোপন তথ্য সরকারবিরোধীদের কাছে ফাঁস করে দেন, তাহলে তাদের তো পদোন্নতি হওয়ার কথা না।’ তবে যারা ভালো ও যোগ্য, তাদের পদোন্নতি হলে পুলিশের জন্যই ভালো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শেয়ার করুন
সরোয়ার আলম | ১৩ জুন, ২০২২ ০০:০০

সম্প্রতি অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) থেকে ডিআইজি পদে পদোন্নতি নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, যারা তদবির করতে পেরেছেন, তারাই পদোন্নতি পেয়েছেন। আবার রাজনৈতিক বিবেচনার কারণে যোগ্যতা থাকার পরও কেউ কেউ পদোন্নতি পাননি।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পুলিশ ক্যাডারের সপ্তম ব্যাচ থেকে ২৭তম ব্যাচ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, শতাধিক কর্মকর্তা পদোন্নতি পাননি। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) মেধা অনুসারে পুলিশে পদোন্নতি হচ্ছে না। জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের ঘটনাও রয়েছে।
গত মঙ্গলবার ৪৬ জন পুলিশ সুপারকে (এসপি) অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এর আগে অতিরিক্ত ডিআইজি থেকে ডিআইজি হয়েছেন ৩২ জন।
পুলিশ সূত্র জানায়, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) থেকে অতিরিক্ত ডিআইজি পর্যন্ত পদোন্নতি হয় বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির (ডিপিসি) মাধ্যমে। ডিপিসির প্রধান হন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব। ডিআইজি থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পর্যন্ত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হয় সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) মাধ্যমে। পদাধিকার বলে এসএসবির প্রধান থাকেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। আর নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের (কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর) পদোন্নতি হয় পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে। পদাধিকার বলে প্রধান থাকেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, সবাই পদোন্নতি পাবেন না। নিচের ধাপের তুলনায় ওপরের ধাপে পদের সংখ্যা কম। তিনি বলেন, ‘পুলিশে যাদের যোগ্যতা আছে, তারাই পদোন্নতি পাচ্ছেন। পদোন্নতি দেওয়ার আগে সবার আমলনামা যাচাই-বাছাই করা হয়। কোনো তদবিরে কাজ হয় না। যারা পাচ্ছেন না, তাদের নিশ্চয় আমলনামা ভালো না। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে যে তালিকা আসে তা গভীরে গিয়ে দেখি আমরা। কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব করা হয় না।’
পুলিশে পদোন্নতির ক্ষেত্রে পিএসসির মেধাক্রম, কর্মদক্ষতা, আচরণ, বিভাগীয় মামলা, দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ এসব বিষয় বিবেচনা করা হয়। তবে এসব মানদ-ের বাইরে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হয়।
পুলিশ ক্যাডারে মঞ্জুরিকৃত পদ আছে এএসপি ১২২২, অতিরিক্ত এসপি ১০০১, এসপি ৫৯৩, অতিরিক্ত ডিআইজি ২৪৬, ডিআইজি ১১৭ ও অতিরিক্ত আইজিপি ২২টি।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দেশ রূপান্তরকে জানান, বিসিএস সপ্তম ব্যাচে পাঁচজন কর্মকর্তার মধ্যে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ ও অতিরিক্ত আইজিপি ড. মইনুর রহমান চৌধূরী কর্মরত আছেন। আরেকজন মোহাম্মদ নাজিবুর রহমান অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি পেয়ে গত বছর অবসরে গেছেন। বাকি দুজন এখনো ডিআইজি হিসেবে কর্মরত আছেন। তারা হলেন মুহাম্মদ মাহবুব মহসীন ও হেলাল উদ্দিন বদরী। দীর্ঘদিন ধরেই তারা এই পদে আছেন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) কর্মরত এই দুজন কর্মকর্তা কিছুদিন পরেই অবসরে যাবেন।
অষ্টম ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যে কর্মরত আছেন ১৩ জন। তাদের মধ্যে অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন পিএসসির মেধাক্রমে ২, ৫, ৯, ১০, ১১ ও ১৩ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা। বাকিদের পদোন্নতি হয়নি। তাদের মধ্যে আছেন ডিআইজি একজন, অতিরিক্ত ডিআইজি চারজন ও পুলিশ সুপার (এসপি) দুজন। কয়েক মাস আগে পদোন্নতি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে অবসরে গেছেন দুই কর্মকর্তা। এ ব্যাচের অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তার চাকরির মেয়াদ চুক্তির ভিত্তিতে এক বছর বাড়ানো হয়েছে।
এসপি পদে থেকে কিছুদিন আগে অবসরে যাওয়া অষ্টম ব্যাচের কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান দেশ রূপান্তরকে জানান, পদোন্নতি পেতে নানাভাবে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। একই ব্যাচের পদোন্নতিবঞ্চিত হাবিবুর রহমান বলেন, ‘অনেক কষ্ট নিয়ে কিছুদিন আগে অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে অবসরে গিয়েছি। এই ব্যাচে অনেকেই পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত আইজিপি হয়েছেন। পিএসসির মেধাতালিকায় আমার স্থান এক নম্বরে। অথচ আমার পদোন্নতি হয়নি। কী কারণে পদোন্নতি হলো না, তা আজও জানতে পারলাম না।’ তিনি আরও বলেন, ‘পদোন্নতি না হওয়ায় আর্থিক দিক থেকে বঞ্চিত হয়েছি, সামাজিকভাবে হেয় হয়েছি আর বিভাগের লোকজনের কাছে ছোট হয়েছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে হাবিবুর রহমান দাবি করেন, ‘পুলিশে নানা গ্রুপিং আছে। আমার কাছে মনে হয়, গ্রুপিংয়ের কারণে পদোন্নতি থেকে অনেককেই বঞ্চিত হতে হচ্ছে। এই গ্রুপিং ভেঙে দিতে হবে। যোগ্যতার পাশাপাশি মেধাবী ও মেধানুসারে পদোন্নতি দিলে পুলিশের জন্যই মঙ্গল।’
অষ্টম ব্যাচের আরেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল্লাহেল বাকী ডিআইজি হিসেবে অবসরে গেছেন। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পদোন্নতি কেন হয়নি তা বলতে পারব না। এতে আমার কোনো দুঃখ নেই। পুলিশের প্রতিটি সদস্যই দেশপ্রেমিক। দেশের জন্য সবাই কাজ করেন। এই বিবেচনা থেকে কারও যদি পদোন্নতি না হয়, তা খুবই দুঃখজনক।’
১২তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ৩১ জন। তাদের মধ্যে অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি পেয়েছেন পিএসসির মেধাক্রমে ৩, ৬, ৮, ১০, ১১, ১৩, ১৫, ২৩, ২৫, ২৬ ও ২৮ নম্বরের কর্মকর্তারা। এখনো ডিআইজি হিসেবে আছেন ৮ জন, অতিরিক্ত ডিআইজি ৮ ও এসপি ২ জন। দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি মিজানুর রহমান এই ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি বরখাস্ত হয়েছেন এবং এখন কারাগারে আছেন। তা ছাড়া একজন অতিরিক্ত ডিআইজিকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
১৫তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ৬৬ জন। এর মধ্যে অতিরিক্ত আইজিপি (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন মেধাতালিকায় ১, ৩, ৮, ১১ ও ২৪ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা। এখনো এসপি ২৯, অতিরিক্ত ডিআইজি ১৯ ও ডিআইজি পদে ১৩ জন কর্মরত আছেন।
১৭তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ৪৯ জন। তাদের মধ্যে ডিআইজি পদে পদোন্নতি পেয়েছেন মেধাতালিকার ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৪, ১৭, ১৮, ১৯, ২২, ৩০, ৩২, ৩৪, ৩৫, ৩৭, ৪১, ৪৪ ও ৪৭ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা। এই ব্যাচের ১৭ জন এখনো এসপি পদমর্যাদার কর্মকর্তা আছেন (একজন চলতি দায়িত্ব), একজন ডিআইজি উচ্চ আদালতের আদেশে পদোন্নতি পেয়েছেন। অতিরিক্ত ডিআইজি আছেন ১১ জন।
১৮তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ৫৫ জন। এর মধ্যে ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন মেধাক্রমের ১, ৬, ৭, ৮, ১১, ১২, ১৪, ১৬, ১৮, ১৯, ২২, ২৪, ২৬, ২৭, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৪, ৩৮, ৪০, ৪১, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৫৩, ৫৪ নম্বর কর্মকর্তা। এই ব্যাচের ১৩ জন এখনো এসপি পদমর্যাদায় কর্মরত। এ ছাড়া অতিরিক্ত এসপি একজন ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদে ১৩ জন রয়েছেন।
২০তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ১০৬ জন। তাদের মধ্যে পদোন্নতি পেয়েছেন মেধাতালিকায় ৪, ৯, ১০, ১৩, ১৪, ১৭, ২০, ২৬, ৩৩, ৪২, ৫৬, ৬৪, ৭৬ ও ৮৪ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা। এখনো অতিরিক্ত এসপি ৪, এসপি ৬২ ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদে রয়েছেন ২২ জন।
২১তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ৪৯ জন। তাদের মধ্যে এসপি পদে পদোন্নতি পাননি পিএসসির মেধাক্রমের ৮, ১৬, ৩৬ ও ৩৭ নম্বরধারীরা।
২২তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ৪২ জন। তাদের মধ্যে এসপি পদে পদোন্নতি পাননি মেধাক্রমের ১০ ও ২৭ নম্বরধারী কর্মকর্তারা।
২৪তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ২০১ জন। তাদের মধ্যে এসপি পদে পদোন্নতি পাননি মেধাতালিকায় ২৫, ৩১, ৪০, ৪১, ৪৫, ৭৩, ৭৫, ৮০, ৮১, ৮৮, ১০৪, ১২৫, ১৩৮, ১৩২ ও ১৬৬ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা।
২৫তম ব্যাচের কর্মরত আছেন ১৯২ জন। তাদের মধ্যে এসপি পদে যেতে পারেননি মেধাক্রমে ৭, ২৩, ২৫, ৩৬, ৪৮, ৫৮, ৬৩, ৭৯, ১০৯, ১১২, ১১৯, ১২৭, ১৩১, ১৫০, ১৫৪, ১৭৮, ১৮৬, ১৯০ ও ১৯২ নম্বরের কর্মকর্তারা।
২৭তম ব্যাচে কর্মরত আছেন ১৩৭ জন। তাদের মধ্যে এসপি পদে পদোন্নতি পেয়েছেন মেধাতালিকার ১, ৫, ৬, ৮, ৯, ১০, ১১, ১৩, ১৬, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ৩০, ৩২, ৩৩, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৪০, ৪১, ৪২, ৪৫, ৪৬, ৪৮, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৮, ৫৯, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৭, ৬৮, ৬৯, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪, ৭৫, ৭৭, ৭৮, ৮১, ৮২, ৮৪ ও ৮৫ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা। এরপর আর কোনো ব্যাচের এসপি পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হয়নি।
বিসিএস ১২তম ব্যাচের এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, যারা তাকে স্যার বলতেন, তারা পদোন্নতি পেয়ে ওপরে চলে গেছেন। এখন আর তাকে স্যার বলেন না, তিনিও তুমি সম্বোধন করেন না। কোনো সম্বোধন ছাড়াই দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যান। তদবির করার লোক না থাকায় হয়তো তার পদোন্নতি হচ্ছে না বলে মনে করছেন তিনি।
পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তার অভিযোগ, প্রতিটি সরকারের আমলেই তদবিরের পাশাপাশি রাজনৈতিক বিবেচনায় পদোন্নতি হয়। এই কর্মকর্তার দাবি, নিয়মের বাইরে গিয়ে এখন পদোন্নতি হচ্ছে।
২ জুন এসপি থেকে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে ৭৩ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এখানেও পিএসসির মেধাক্রম অনুসরণ করা হয়নি। ২১তম ব্যাচের ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৯, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৫, ২৬, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৮, ৩৯, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭ ও ৪৮ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়েছেন।
২২তম ব্যাচের ১, ৩, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১১, ১২, ১৩, ১৫, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২২, ২৩, ২৪, ২৬, ২৮, ২৯, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৮, ৩৯, ৪১ ও ৪২ নম্বরে থাকা কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়েছেন। তা ছাড়া ২৪তম ব্যাচের ১, ৩, ৪, ৫, ৭ ও ৮ নম্বর থাকা কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়েছেন।
এই পদোন্নতির বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, পদোন্নতিপ্রাপ্তদের মধ্যে কারও কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। তারপরও তদবির করে কেউ কেউ পদোন্নতি পেয়ে গেছেন।
অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, পুলিশ একটি বড় বাহিনী। এই বাহিনীর পদোন্নতি নীতিমালা মানা খুবই প্রয়োজন। নীতিমালা মানলে পদোন্নতির সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড থাকবে, যখন-তখন জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটবে না।
তবে সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পুলিশে পদোন্নতির আগে প্রতিটি কর্তকর্তার বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশ সদর দপ্তরের গোপন প্রতিবেদন আমলে নেওয়া হয়। যাদের আমলনামা ভালো, তারা পদোন্নতি পাচ্ছেন। পুলিশে চাকরি করেন অথচ গোপন তথ্য সরকারবিরোধীদের কাছে ফাঁস করে দেন, তাহলে তাদের তো পদোন্নতি হওয়ার কথা না।’ তবে যারা ভালো ও যোগ্য, তাদের পদোন্নতি হলে পুলিশের জন্যই ভালো বলে মন্তব্য করেন তিনি।