আগামী ৯০ দিনের জন্য পাল্টাপাল্টি নতুন শুল্ক আরোপ না করে বাণিজ্য যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের বিভিন্ন দিক ও পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বুয়েন্স আয়ার্সে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলন চলাকালীন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই সিদ্ধান্ত নেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি চীনও ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারির পর যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের উপর নতুন বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করবে না। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কৃষি, জ্বালানি এবং অন্যান্য পণ্য ক্রয় করতেও রাজি হয়েছে চীন। চলতি বছর বাণিজ্য যুদ্ধ শুরুর পর এবারই প্রথম দুই দেশের প্রেসিডেন্ট একত্রে বৈঠকে বসেন।
জি-২০ সম্মেলন থেকে ফেরার সময় এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “কৃষি, শিল্প পণ্য, কম্পিউটার এবং সকল ধরনের পণ্যের উপর এই চুক্তি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
অন্যদিকে সাংবাদিকদের শি জিনপিং বলেন, “আমাদের মধ্যকার সহযোগিতাই একমাত্র বিশ্ব শান্তি এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারে।”
এছাড়া চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং শি বলেন, “চীন দেশজ বাজার এবং জনগণের চাহিদার ভিত্তিতে পণ্য আমদানি বাড়াতে ইচ্ছুক। নিয়মতান্ত্রিকভাবে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার সমস্যা সমাধান করা হবে।”
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, বাণিজ্য যুদ্ধবিরতিকালীন সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন কোনো চুক্তিতে না পৌঁছতে পারলে ১০ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়ে ২৫ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা কার্যকর হবে।
জি-২০ সম্মেলনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে ২০ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। গত সেপ্টেম্বরে এসব পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। আগামী ১ জানুয়ারি এই শুল্কের হার বাড়িয়ে ২৫ শতাংশে উন্নীত করার কথা ছিল।
বুয়েন্স আয়ার্সের বৈঠক সফল না হলে ২৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের চীনা পণ্যের বার্ষিক রফতানিতে ১০-২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
জি-২০ সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো সাংবাদিকদের বলেন, “বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) আধুনিকায়নের প্রয়োজন রয়েছে।”
এবারই প্রথম জি-২০ থেকে বলা হয়েছে, ডব্লিউটিও তার উদ্দেশ্য পূরণের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারছে না এবং সংস্থাটির পুর্নসংস্কার প্রয়োজন।
চলতি বছরের শুরুতে চীনের বিরুদ্ধে বাণিজ্য যুদ্ধের ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেসময় দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ শুরু হয়। জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ২৫ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ১১ হাজার কোটি ডলার মূল্যের পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করে চীন।