আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেনের ছেলে হামজা বিন ওসামার নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছে সৌদি আরব।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়েছে।
আলজাজিরা জানায়, ‘উম আল-কুরা’ পত্রিকায় শুক্রবার ছাপানো ওই বিবৃতি অনুযায়ী গত নভেম্বরে রাজকীয় এক আদেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
হামজা বিন লাদেনের সন্ধান চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা (১০ লাখ ডলার) পুরস্কার ঘোষণার একদিন পর বিষয়টি সামনে এলো।
ওসামা-পুত্রকে আল-কায়েদার ‘উদীয়মান নেতা’ আখ্যায়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত ২০১৭ সাল থেকে হামজা বিন লাদেনকে ‘সন্ত্রাসী’ তালিকাভুক্ত করে দেশটি।
গত ২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে এক অভিযানে বিন লাদেনকে হত্যা করে মার্কিন কমান্ডো বাহিনী। অ্যাবোটাবাদের ওসামার কম্পাউন্ড থেকে উদ্ধার হওয়া এক চিঠিতে দেখা যায়, ছেলেদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় হচ্ছে হামজা। বিন লাদেন তার পরবর্তীতে আল কায়েদা নেতা হিসেবে তাকে প্রস্তুত করছেন।
বিবিসি জানায়, বাবার হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে গত কয়েক বছরে হামজা একাধিকবার অডিও ও ভিডিও বার্তায় যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্রদের ওপরে হামলার আহ্বান জানান তার অনুসারীদের প্রতি।
যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে মার্কিন লক্ষ্যবস্তুতে হামলার হুমকিও দেন হামজা বিন লাদেন। এমনকি ইয়েমেনের উপজাতিগুলোকে সেখানকার আল-কায়েদার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ওই হামলায় প্রায় তিন হাজার লোক নিহত হয়। হামলা জন্য জন্য ওসামা বিন লাদেন ও আল-কায়েদাকেই দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র।
হামজা বিন লাদেন বিয়ে করেন যুক্তরাষ্ট্রে ওয়ান ইলেভেন হামলার চার বিমানের একটির ছিনতাইকারী মোহাম্মদ আত্তার মেয়েকে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনৈতিক দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মিখাইল এভানোফ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হামজা আফগানিস্তান বা পাকিস্তানে আছেন এ মুহূর্তে। সেখান থেকে তিনি ইরানে প্রবেশ করার অপেক্ষায় আছেন। তবে তিনি দক্ষিণ মধ্য এশিয়ার যে কোনো জায়গাতেও থাকতে পারেন।
বেশ কয়েক বছর হামজা তার মায়ের সঙ্গে ইরানে ছিলেন। কিন্তু বিয়ে করার পর সেখানে তিনি অসুবিধায় পড়েন। ফলে তিনি পাকিস্তান, আফগানিস্তান বা সিরিয়ার যে কোনো জায়গায় থাকতে পারেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।