উটাহ অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা রুবি ফ্রাঙ্ক। কীভাবে বাচ্চাদের যত্ন নিতে হয়, সে সম্পর্কে ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে বেশ জনপ্রিয় তিনি। কিন্তু এবার সেই নারী ইনফ্লুয়েন্সারকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে খোদ শিশু নির্যাতনের অভিযোগে!
এমন ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ অঙ্গরাজ্যে। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা বিবিসি নিউজ।
অপুষ্টিতে আক্রান্ত ছেলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর গত বুধবার উটাহের আইভিনস থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
কর্মকর্তারা ফ্রাঙ্কের ১০ বছর বয়সী মেয়েকেও হিলডেব্র্যান্ডের বাড়ি থেকে উদ্ধার করেন। এই শিশুও অপুষ্টিতে ভুগছে।
ফ্রাঙ্ক ও তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদারের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনের দুটি ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সান্তা-ক্লারা আইভিনস পাবলিক সেফটি ডিপার্টমেন্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রতিবেশীরা জানান যে, ফ্রাঙ্কের ছেলেটির শরীর ক্ষতবিক্ষত ছিল এবং সে অপুষ্টিতে ভুগছে। তার শরীরে ক্ষতগুলোতে ডাক্ট টেপ লাগানো ছিলো। এ ছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা যখন কিশোরটিকে উদ্ধার করেন, তখন গুরুতর ক্ষত ও পুষ্টিহীনতা দেখেছেন।’
কিশোরটিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। অপুষ্টি ও গভীর ক্ষতের কারণে তাকে হাসপাতালে নিতে হয়েছিল। ফ্রাঙ্কের ১০ বছর বয়সী মেয়েকেও হাসপাতালে নেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, ফ্রাঙ্কের ১২ বছর বয়সী ছেলে জানালা দিয়ে বেরিয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে খাবার ও পানি চাইতে দৌড়ে যেত।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রুবি ফ্রাঙ্ক ও তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার জোডি ন্যান হিলডেব্র্যান্ড। ইউটিউবে বাচ্চাদের যত্ন ও লালন-পালন সম্পর্কে ভিডিও বানাতেন তারা। হিলডেব্র্যান্ড একজন পরামর্শক এবং জীবনযাপন পদ্ধতি শেখানোর কোচ। কানেকশন ক্লাসরুম (ConneXions Classroom) নামে একটি ওয়েবসাইট চালান তিনি। ফ্রাঙ্কের কিছু ইউটিউব ভিডিওতে হিলডেব্র্যান্ডকেও দেখা গেছে।
২০১৫ সালে ‘এইট প্যাসেঞ্জার’নামক ইউটিউব চ্যানেলের কারণে বিখ্যাত হন ৪১ বছর বয়সী ফ্রাঙ্ক। সেখানে তিনি তাঁর ছয়টি সন্তানকে লালন-পালনের ভিডিওচিত্র দিতেন। চলতি বছরের শুরুতে চ্যানেলটি ডিঅ্যাকটিভেট হওয়ার আগে পর্যন্ত এটির সাবস্ক্রাইবার ছিল ২০ লাখের বেশি।
তবে ফ্রাঙ্ক তাঁর চ্যানেলে দেখানো কঠোর পেরেন্টিং পদ্ধতির কারণে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হয়েছিলেন। ফ্রাঙ্কের ছেলের জানায়, তাঁর মায়ের পেরেন্টিং পদ্ধতি অনুযায়ী তাকে শাস্তি হিসেবে কয়েক মাস শিমের বীজের ব্যাগে শুয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়। এ ছাড়া বাচ্চাদের শৃঙ্খলা শেখাতে খাবার বন্ধ করে দেয়াসহ আরও কিছু কঠোর ব্যবস্থার বর্ণনা দেন ফ্রাঙ্ক।
তবে বীজের ব্যাগের ওপর ঘুমানোর ঘটনাটি কিছু দর্শককে ক্ষুব্ধ করায় তাঁরা স্থানীয় শিশু প্রতিরক্ষামূলক পরিষেবায় ফোন কল করে ফ্রাঙ্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন। এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় তাকে আর বেরিয়ে আসে এসব তথ্য।