নারায়নগঞ্জে যে যেভাবে পারছে দখল করে নিচ্ছে রেলওয়ের সম্পত্তি। এক হিসেবে দেখা গেছে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ও আদমজী রেল রুটে হাজার কোটি টাকার সরকারী সম্পত্তি অবৈধ দখলে চলে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান হলেও কিছুদিন না যেতেই আবারও দখল হয়ে যাচ্ছে রেলওয়ের বিপুল পরিমান সম্পত্তি।
গত বছরের ৪ জানুয়ারি নগরীর উকিলপাড়া থেকে নারায়ণগঞ্জ রেলষ্টেশন পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালায় বাংলাদেশ রেলওয়ে। রেলওয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ডিভিশনাল এস্টেট অফিসার মো. সফি উল্লাহ এবং জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবাইয়া খানমের নেতৃত্বে নগরীর দুই নম্বর রেল গেইট এলাকা থেকে চাষাঢ়া রেল গেইট পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। বছর না ঘুরতেই উচ্ছেদকৃত জমি আবারও বেদখল হয়ে গেছে। এভাবেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় চর দখলের মতো দখল হয়ে গেছে রেলওয়ের বিপুল পরিমান জমি। এসব জমিতে দোকানপাট-মার্কেট নির্মাণ করে প্রভাবশালীরা ভাড়া দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রেলওয়ের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজশে সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎ করে গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন মার্কেট।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জ রেল স্টেশন থেকে চাষাড়া পর্যন্ত দুই পাশে জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ দোকানপাট। এসব দোকান ও স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করছেন দখলদাররা। রোড স্টেশন সংলগ্ন জমিতে রয়েছে অর্ধশতাধিক দোকান ও স্থাপনা। ফলে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে ট্রেন।
স্থানীয়রা জানায়, নারায়ণগঞ্জে যে যেভাবে পারছে রেলওয়ের জমি দখল করে নিচ্ছে। রাতের অন্ধকারে স্থাপনা তুলে এখনো দখল চলছে। এর আগে বেশ কিছু উচ্ছেদ অভিযান হলেও কিছুদিন পর আবার দখল হয়ে গেছে। প্রায় হাজার কোটি টাকার রেলের সম্পত্তি উদ্ধার করে জনকল্যানমূলক প্রকল্প করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার কামরুল হাসান বলেন, আমরা উচ্ছেদ করি তারা (অবৈধ দখলদার) আবার বসে, আবার উচ্ছেদ করি আবার বসে। স্থায়ী পরিকল্পনা ছাড়া অবৈধ দখলদার নির্মুল সম্ভব হচ্ছেনা।
নারায়ণঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জে রেলওয়ের জায়গা দখলমুক্ত করে জনকল্যানে কাজে লাগানোর জন্য কাজ করছি। তাহলে অবৈধ দখলদার নির্মুল করা সম্ভব হবে।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, রেলওয়ের বেদখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধারের বিষয়ে আমি রেলমন্ত্রী, সংসদীয় কমিটির সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সকলেই দেশ প্রেমিক। রেলের জমি উদ্ধারের বিষয়ে রেলমন্ত্রীসহ সবাই প্রচন্ডভাবে আগ্রহী।