বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

বাংলাদেশে কম খরচ করছেন বিদেশিরা

আপডেট : ১৪ মে ২০২৪, ০৬:১৮ এএম

নানা সীমাবদ্ধতা আরোপের পরও দেশের বাইরে বাংলাদেশি নাগরিকদের ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বেড়েছে। ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে এ খাতে খরচ বেড়েছে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। তবে উল্টো চিত্র দেখা গেছে দেশে বিদেশিদের ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারে। তারা এই প্লাস্টিক কার্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশে কম খরচ করছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশিরা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ২৪০ কোটি টাকা ব্যয় করেছিলেন। পরের মাস মার্চে তাদের এ ব্যয় নেমে এসেছে ২২৬ কোটি টাকায়। এক মাসে ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশে বিদেশিদের ব্যয় কমেছে ১৪ কোটি টাকা বা ৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

বাংলাদেশে মার্চে ক্রেডিট কার্ডে বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে মার্কিন নাগরিকরা খরচ করেছেন ৫৬ কোটি টাকা। এ সময়ে যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা ২৬ কোটি, ভারতের নাগরিকরা ২৩ কোটি, অস্ট্রেলিয়ানরা ৬ কোটি ও কানাডার নাগরিকরা খরচ করেছে ৮ কোটি টাকা। এ সময়ে দেশে সিঙ্গাপুর, জাপান, ইউএই, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব ও ইতালির নাগরিকরা ৩ কোটি থেকে ৮ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয় করেছেন ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে। এর বাইরে অন্যান্য দেশের নাগরিকরা খরচ করেছেন ৫৩ কোটি টাকা।

অবশ্য ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশে বিদেশিদের খরচ কমলেও বিদেশে বাংলাদেশিরা বাড়িয়েছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মার্চ মাসে বাংলাদেশিরা বিদেশে গিয়ে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচ করেছে ৫০৩ কোটি টাকা, যা আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৪৯৯ কোটি টাকা। সে হিসাবে মার্চে বেড়েছে ৪ কোটি টাকা।

বিদেশে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় ভারতে, যেখানে মার্চে কিছুটা কমেছে। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ভারতে গত মার্চে বাংলাদেশিরা খরচ করেছেন ১০৬ কোটি টাকা, যা আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে ছিল ১০৮ কোটি টাকা। সে হিসেবে ২ কোটি টাকা কম খরচ করেছেন বাংলাদেশিরা। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ভারতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশিরা ৯৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ করেন। যেখানে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে খরচ করেছিলেন ১১৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়াতি কিছুটা বাড়লেও মার্চে আবারও খরচ কমিয়েছেন বাংলাদেশিরা।

তবে মার্চে ভারতে কমলেও খরচ বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। ওই দেশটিতে ফেব্রুয়ারিতে খরচ করেছিলেন ৬০ কোটি টাকা, মার্চে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ কোটি। এই দুই দেশের পর মার্চে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডের বেশি ব্যবহার করেছেন ইউএইতে ৪৯ কোটি। এ ছাড়া থাইল্যান্ডে ৩৪ কোটি, যুক্তরাজ্যে ৩১ কোটি, সিঙ্গাপুরে ৩৩ কোটি, কানাডায় ২৫ কোটি, সৌদিতে ৩৫ কোটি, মালয়েশিয়ায় ১৯ কোটি, আয়ারল্যান্ডে ১৪ কোটি, অস্ট্রেলিয়ায় ১২ কোটি টাকা খরচ ছিল উল্লেখযোগ্য। এ সময়ে অন্যান্য দেশে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৬১ কোটি টাকা খরচ করেন বাংলাদেশিরা।

বিদেশে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি খরচ করেছেন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে, ১২১ কোটি টাকা। এ ছাড়া খুচরা দোকানে ৭৭ কোটি, নগদ উত্তোলন ৬০ কোটি, ফার্মেসিতে ৬৮ কোটি, কাপড় কেনায় ৪২ কোটি, পরিবহনে ৩৬ কোটি, ব্যবসায় সেবা বাবদ ৩৭ কোটি, সরকারি সেবায় ২২ কোটি, প্রফেশনাল সার্ভিস ২৩ কোটি ও ইউটিলিটি বাবদ ১১ কোটি টাকা।

এদিকে চলতি বছরের মার্চ মাসে দেশের ভেতরে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন ফেব্রুয়ারি মাসের চেয়ে ১৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে দেশের ভেতর ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা। আর মার্চ মাসে হয়েছে ২ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে মার্চে বেড়েছে ৪২৯ কোটি টাকা।

দেশের অভ্যন্তরে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে খরচ হয়েছে ১ হাজার ৩৮১ কোটি, খুচরা দোকানে ৩৯১ কোটি, ইউটিলিটি বাবদ ২৫১ কোটি, নগদ উত্তোলন ২০৩ কোটি, ফার্মেসিতে ১৪০ কোটি, কাপড় কেনায় ৩৪৪ কোটি, পরিবহনে ৯৮ কোটি, ফান্ড স্থানান্তর ৯৬ কোটি, বিজনেস সার্ভিস ৫২ কোটি, প্রফেশনাল সার্ভিস ১৯ কোটি ও সরকারি সেবায় ৯ কোটি টাকা।

এ ছাড়া দেশের ভেতর গত জানুয়ারিতে ভিসা কার্ডের মাধ্যমে খরচ হয়েছে ২ হাজার ১২৬ কোটি টাকা, মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে খরচ হয়েছে ৫২৩ কোটি টাকা, অ্যামেক্সের মাধ্যমে খরচ হয়েছে ৩৩২ কোটি টাকা, ডিনার্সের মাধ্যমে খরচ হয়েছে ৩ কোটি টাকা, কিউক্যাশ প্রোপ্রাইটরের মধ্যে খরচ হয়েছে ১ কোটি টাকা।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত