নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকায় গুলিতে দ্বীন ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিক ও তার ভাই মিজানুর রহমানসহ ৩১ জনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে ওই শিক্ষার্থীর বাবা বিল্লাত হোসেন জসু মেম্বারকে প্রধান আসামি করে এ অভিযোগ দেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিক, তার ভাই মিজানুর রহমান ও শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে অস্ত্রধারীরা নাওড়া এলাকার সাবেক মেম্বার মোশারফ ভূঁইয়ার বাড়ি দখল করতে যায়। এ সময় দ্বীন ইসলাম ও মোশারফ মেম্বারের লোকজন তাদের বাধা দেন। একপর্যায়ে রফিকের নির্দেশে জসু মেম্বার শটগান দিয়ে গুলি ছোড়েন। গুলি দ্বীন ইসলামের পেটে ও বুকে বিদ্ধ হয়। পরে জসু মেম্বারের কাছ থেকে মিজান শটগান ছিনিয়ে নিয়ে দ্বীন ইসলামের বুকে গুলি করেন। মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সদ্য এসএসসি পাস করা দ্বীন ইসলামের মা ঝর্ণা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার চানডার কী দোষ আছিল গো! আমার পুতে (ছেলে) কইত, মা আমি বড় অইয়া মানুষ অইমু। তোমগো দুঃখ শেষ করমু। বাবার আর কষ্ট কইরা মাছ বেচবার লাগব না। আমার পুতের আশা খান খান কইরা দিল মিজানে। রফিকের নির্দেশে মিজান নিজে গুলি কইরা আমরার পোলাডারে মাইরা ফালাইছে।’
বিল্লাত হোসেন বলেন, ‘আমার পোলায় তো কোনো দোষ করে নাই। আমার পোলারে ক্যান মিজানে গুলি করল? আমার হেই সোনার টুকরারে আমি এহন কই পামু?’
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ‘রফিক-মিজান বলে বেড়াচ্ছে, একটা খুন ওগো লেইগা বিষয় না। তিন কোটি টাকা রাখছে খুন থেকে বাঁচার লাইগা। আর পুলিশ নাকি হেগো পকেটে। আরও বড় বড় মন্ত্রী-এমপি নাকি হেগো লগে আছে। আল্লায় জানে আবার কারে খুন করে।’
এদিকে নাওড়া এলাকায় এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকার মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি।
রূপগঞ্জ থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘এখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকার বিভিন্ন স্পটে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মামলার প্রস্তুতি চলছে।’