বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

গর্ভাবস্থায় মূত্রনালির সংক্রমণ

আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩০ এএম

মূত্রনালির সংক্রমণ বা ইউটিআই এখন সাধারণ বিষয় আর গর্ভাবস্থায় জীবাণু মূত্রনালিতে প্রবেশ করলে মূত্রনালির সংক্রমণ ঘটায়। গর্ভাবস্থার ৬-২৪তম সপ্তাহ সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সময়। গবেষণা থেকে জানা যায়, প্রায় ৩১ শতাংশ মহিলার গর্ভাবস্থায় উপসর্গহীন মূত্রনালির সংক্রমণ হয়। 

কারণ

অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া : মহিলাদের মূত্রনালি থেকে মলদ্বারের দূরত্ব খুব কম, যার ফলে ঊ-পড়ষর-এর মতো ব্যাকটেরিয়া সহজেই মূত্রনালিতে প্রবেশ করতে পারে। শারীরিক পরিবর্তন : হরমোনের মাত্রা (প্রোজেস্টেরন ও ইস্ট্রোজেন) ও গর্ভাশয় এবং জরায়ুর আকার বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মূত্রাশয়ে চাপ পড়ে এবং মূত্রনালির মূত্রপ্রবাহ ধীরে হয়। মূত্রাশয় সম্পূর্ণরূপে মূত্র বের করতে পারে না। গর্ভাবস্থায় প্রস্রাবে প্রোটিন, হরমোন ও চিনির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রস্রাবের অমøতা কমে যায়, জীবাণুর প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। গভাবস্থায় সহবাস করলে অনেক ক্ষেত্রে যোনিপথের জীবাণু মূত্রনালিতে প্রবেশ করতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব আটকে রাখা। নিয়ন্ত্রণহীন ডায়াবেটিস, মূত্রনালিতে পাথর অপারেশন ও দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা।

লক্ষণ

তলপেটে ব্যথা বা টান ধরা।

কাঁপুনি ও জ¦র। মূত্রের সঙ্গে মিউকাস বা রক্ত যাওয়া।

প্রস্রাব করার সময় জ¦ালা যন্ত্রণা। প্রস্রাবে দুর্গন্ধ।  প্রস্রাব করার তাগিদ। যৌন সহবাসের সময় যন্ত্রণা। কিডনি সংক্রমিত হলে পিঠে ব্যথা, বমি-বমি ভাব, বমি হওয়া, উচ্চমাত্রায় জ¦র। গর্ভস্থ বাচ্চার নড়াচড়া কমে যাওয়া। মূত্রের পরিমাণ কমে যাওয়া।

জটিলতা ও ঝুঁকিগুলো

নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্রসব (প্রি-টার্ম লেবার)। নির্দিষ্ট সময়ের আগে পানি ভেঙে যাওয়া। জন্মের সময় শিশুর ওজন কম হওয়া। কিডনিতে সংক্রমণ বা পাইলোনেফ্রাইটিস যা, মা ও শিশু উভয়ের জন্যই প্রাণঘাতী।

বারবার সংক্রমণ হওয়া।

কীভাবে নির্ণয় করা হয়

 ইউরিন আরএমই ও কালচার (Urine R/ME & Culture)- মূলত প্রতি প্রসব-পূর্ববর্তী ভিজিটে এই পরীক্ষাটি করানো উচিত।

‘ইউটিআই’ নিরাময়ের উপায়

গর্ভাবস্থায় নিরাপদ অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। গুরুতর সংক্রমণে হাসপাতালে ভর্তি করে  চিকিৎসা করা। প্রচুর তরল ও পানি পান করা, যেমন ডাবের পানি, তাজা ফলের রস, বাটার মিল্ক, দুধ, লেবু পানি ইত্যাদি। ভিটামিন সি-যুক্ত তাজা ফল-সবজি : পাতিলেবু, কমলালেবু, ক্যাপসিকাম, বাদাম, ওটস ইত্যাদি খাওয়া। মিষ্টি ছাড়া ক্র্যানবেরির রস, প্রোবায়োটিক যেমন দই, চিজ ও অন্যান্য সাপ্লিমেন্ট- বিটা কেরোটিন, জিংক ইত্যাদি খাওয়া। খাদ্যাভ্যাস থেকে চিনি, পরিশোধিত খাবার, ক্যান্ড জুস, অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন বাদ দিতে হবে। সহবাসের সময় কনডম ব্যবহার। যৌনমিলনের আগে ও পরে প্রস্রাব করা ও স্থানটি ধুয়ে ফেলতে হবে। ইউটিআইর চিকিৎসা চলা অবস্থায় সহবাস এড়িয়ে চলাই ভালো। মহিলাদের হাইজিন প্রোডাক্ট যেমন- পাউডার, ডিওডরেন্ট, অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম ইত্যাদি ব্যবহার না করা। কিছুদিন পরে যন্ত্রণা কমে গেলেও অ্যান্টিবায়োটিকের নির্দিষ্ট প্রেসক্রিপশন অবশ্যই মেনে চলা।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত