টেস্ট ক্রিকেটে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে ‘বিগ থ্রি’—ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। সাদা পোশাকের ক্রিকেট আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে এই তিন দেশের বোর্ড দুই স্তরের কাঠামো চালুর বিষয়ে জোর দিচ্ছে। চলতি মাসের শেষদিকে আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) এবং ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) প্রধানরা।
অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম সিডনি মর্নিং হেরাল্ড জানিয়েছে, দুই স্তরের এই প্রস্তাবে শীর্ষস্থানীয় দলগুলো থাকবে প্রথম স্তরে, যেখানে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দলগুলো নিয়মিত নিজেদের মধ্যে টেস্ট খেলবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আফগানিস্তান, জিম্বাবুয়ের মতো দলগুলো রেলিগেশন হয়ে দ্বিতীয় স্তর থেকে প্রথম স্তরে খেলবে। এতে বড় দলগুলোর সঙ্গে তাদের টেস্ট খেলার সুযোগ অনেকটাই কমে যাবে।
দুই স্তরের এই প্রস্তাব নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে সদ্য সমাপ্ত বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির বিপুল সাড়া দেখে। এই সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি ভেন্যুতে দর্শকসংখ্যা ছিল প্রায় ৮ লাখ ৩৭ হাজার, যা অ্যাশেজের বাইরে অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজে সর্বোচ্চ।
আইসিসির বর্তমান এফটিপি (ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম) শেষ হবে ২০২৭ সালে। তবে দ্বিস্তর কাঠামো চালু হলে এটি ২০২৬ সালের মধ্যেই কার্যকর হতে পারে বলে জানিয়েছে সূত্র।
এমন প্রস্তাব অবশ্য নতুন নয়। ২০১৬ সালেও র্যাংকিংয়ের শীর্ষ সাত দলকে প্রথম স্তরে এবং পরের পাঁচ দলকে দ্বিতীয় স্তরে রাখার প্রস্তাব উঠেছিল। তবে সেই সময় বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে এর বিরোধিতা করেছিল।
বিসিসিআইয়ের তৎকালীন সভাপতি অনুরাগ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘দুই স্তর হলে ছোট দলগুলোর আয়ের ক্ষতি হবে এবং বড় দলগুলোর বিপক্ষে খেলার সুযোগ কমবে। এটি আমরা চাই না।’
তবে বর্তমান বিসিসিআই কর্মকর্তারা সেই অবস্থান থেকে সরে এসে প্রস্তাবটি সমর্থন করতে আগ্রহী। বিশেষ করে জয় শাহ আইসিসি চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে ভারতীয় বোর্ডের অবস্থান বদলেছে বলে জানা গেছে।
দুই স্তর চালু হলে বাংলাদেশসহ র্যাংকিংয়ের পিছিয়ে থাকা দলগুলোর জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে। বড় দলগুলোর বিপক্ষে খেলার সুযোগ কমে গেলে তাদের অভিজ্ঞতা ও আয়ের ওপর বড় প্রভাব পড়বে।
বিশ্ব ক্রিকেটে এই পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনা চললেও, ছোট দলগুলো কীভাবে এর বিরোধিতা করবে এবং এটি কার্যকর হলে তাদের জন্য কী পরিকল্পনা নেওয়া হবে, তা সময়ই বলে দেবে।