আগের মতো এক দেশে নয়, চলতি বছর থেকেই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ‘হোম অর অ্যাওয়ে’ ভিত্তিতে আয়োজন করতে চায় সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ)। বুধবার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সাফের নির্বাহী কমিটির সভা শেষে এমনটাই জানালেন সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলাল। আগামী ১৫ জুন থেকে ২৫ জুলাই সাত সদস্য দেশ নিয়ে টুর্নামেন্টের একটা তারিখও ঠিক হয়েছে।
নতুন ফরম্যাট অনুযায়ী একটি দল ন্যূনতম ছয়টি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। যার তিনটি তারা খেলবে নিজেদের ভেন্যুতে। অন্য তিনটি অ্যাওয়ে ম্যাচ। রাউন্ড রবিন লিগ পর্ব শেষে শীর্ষ দুটি দল নিয়ে হবে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিক ফাইনাল। সাফ সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মার্কেটিং রাইটস হোল্ডার স্পোর্টসফাইভ-এর এই প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এখন চলতি বছরেই নতুন ফরম্যাটে সাফ আয়োজন সম্ভব কি না, সেটা চূড়ান্ত হবে সাত দেশের সঙ্গে আরেকটি বৈঠকে। এ বছর নতুন ফরম্যাটে না হলে পুরনো ফরম্যাটে নির্ধারিত সময়ে হবে টুর্নামেন্ট।
সাফের নতুন ফরম্যাট হচ্ছে মূলত আসিয়ান কাপের আদলে। সাত দল লিগ ভিত্তিতে একে অপরের মুখোমুখি হবে। এর মধ্যে হোমে ৩টি ও অ্যাওয়ে ৩টি করে ম্যাচ থাকবে। রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে ভারত ও পাকিস্তানের ম্যাচটি হবে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। লিগ পর্ব শেষে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দলের মধ্যে হবে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে-ভিত্তিক ফাইনাল।
হেলাল টেলিফোনে দেশ রূপান্তরকে জানান, ‘মার্কেটিং কোম্পানির চাওয়াই ছিল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ নতুন ফরম্যাটে আয়োজনের। তাতে করে সব ম্যাচেই দর্শক উপস্থিতি নিশ্চিত হবে। এর ফলে হোম ম্যাচের টিকিট বিক্রি থেকে একটা বড় অঙ্কের আয়ের সুযোগ থাকবে দেশগুলোর। সেন্ট্রালাইজড ভেন্যুতে হলে দেখা যায় আয়োজক দলের ম্যাচ বাদে অন্য ম্যাচগুলোতে সেভাবে দর্শক সমাগম হয় না। তাছাড়া সাফের নির্বাহী কমিটিও এখানে বেশ কিছু সুবিধার দিকও খুঁজে পেয়েছে। নতুন ফরম্যাটে প্রতিটি দল ন্যূনতম ছয়টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। যেহেতু সাফ বিমান টিকিট থেকে শুরু করে আয়োজনের সব খরচ বহন করবে, সেহেতু এই ফরম্যাটে সবাই এক মত হয়েছে। তবে এ বছর নতুন ফরম্যাটে আয়োজনের ব্যাপারে আমাদের আবারও সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। সবাই রাজি হলে তো হলোই। না হলে নির্ধারিত তারিখে আমরা সেন্ট্রালাইজড ভেন্যুতে টুর্নামেন্ট আয়োজন করব।’
১৯৯৩ সাল থেকে সাফের সাত দল নিয়ে দু’বছর পরপর মাঠে গড়াচ্ছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। এখন পর্যন্ত হয়েছে ১৪টি আসর। এর মধ্যে ৯ বার শিরোপা জিতেছে ভারত। এছাড়া মালদ্বীপের ঘরে শিরোপা গেছে দুবার। বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা মর্যাদার শিরোপা জিতে নেয় একবার করে। ১৪ বারই টুর্নামেন্ট হয়েছে এক ফরম্যাটে। সাত দলকে দুই গ্রুপে ভাগ করে হয়েছে গ্রুপপর্ব। এরপর দুই গ্রুপ থেকে সেরা চার দল নিয়ে হয়েছে সেমিফাইনাল ও ফাইনাল। তাতে দেখা যেত কোনো কোনো দলকে এক আসরে দুই ম্যাচ খেলেই বিদায় নিতে হতো।