শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

সাবিনাদের বাদ দিয়ে ৩৬ ফুটবলারের সঙ্গে বাফুফের চুক্তি!

'আমাকে আজকে বাফুফের এক কর্মকর্তা মাসিক বেতন অনেক বাড়িয়ে চুক্তি করার কথা বলেছেন। তবে আমি কোন প্রলোভনে ভুলছি না। আমরা বাফুফের সভাপতির দিকে তাকিয়ে আছি। তার সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায় আছি। আশা করছি তিনি ন্যায়বিচার করবেন' নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফুটবলার জানান। 

আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৩ পিএম

ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারকে বয়কট করা ১৮ ফুটবলারকে বাদ দিয়ে ৩৭ ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। সোমবার বাটলারের অধীনে নিয়মিত অনুশীলন করা ফুটবলারদের সঙ্গে মাসিক চুক্তি করেছে বাফুফে। এর মধ্য দিয়ে বিদ্রোহী ফুটবলারদের আসন্ন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে খেলার সম্ভাবণা অনেকটাই শেষ হয়ে গেছে। তাছাড়া কোচকে অপসারণ করার মেয়েদের দাবী বাফুফে সেভাবে আমলে নিচ্ছে না, সেটাও অনেকটা পরিস্কার হয়ে গেছে। কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে এই চুক্তি সেড়েছে বাফুফে। 

বাফুফের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে, তারা মোট ৫৫টি চুক্তিপত্র প্রস্তুত করেছে। তবে সোমবার অনুশীলনে থাকা ৩৬ জনকে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করিয়েছে। তবে আন্দোলনে থাকা ১৮ ফুটবলারের কাছে স্বাক্ষরের জন্য চুক্তিপত্র পাঠায়নি বলে জানান এক ফুটবলার। তবে তিনি নাম প্রকাশ না করার চাননি। 

আন্দোলনে থাকা মেয়েরা বাফুফে ভবনে অবস্থান করলেও, তাদের বলতে গেলে এক ঘরে করে রাখা হয়েছে। বাফুফেও তাদের দাবীর ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও জানায়নি। তবে জানা গেছে তাদের নিয়ে একটা ভিন্ন পন্থা নিয়েছে। সাফজয়ী এই মেয়েদের তারা বাফুফের ক্যাম্পে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে চলেছে। মুখে বাফুফে তাদের ক্যাম্প ছাড়তে বলবে না। তবে নানাভাবেই বুঝিয়ে দেওয়া হবে, কঠোর অবস্থানে যাওয়া মেয়েদের নিয়ে এখন আর বাফুফে ভাবছে না। যদি এই মেয়েরা অবস্থান বদল করে এবং কোচের অধীনে খেলতে রাজী হয়, তবেই তাদের সঙ্গে করা হবে চুক্তি। নইলে পরিস্থিতিটা এমন তৈরী করা হিবে, যাতে বিদ্রোহী মেয়েরা নিজেরাই ক্যাম্প ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়! 

দেশকে পরপর দুইবার সাফ জেতানো মেয়েদের এভাবেই ছেটে ফেলার চক্রান্ত করছে বাফুফে। মেয়েদের মানসিক অবস্থা যাতে আরও খারাপ হয়, সেই চেষ্টাই করছে ফুটবল প্রশাসন। 

জানা গেছে আন্দোলনে থাকা একাধিক ফুটবলারকে মাসিক বেতন বাড়িয়ে চুক্তি করার প্রলোভন দেখিয়েছেন বাফুফের এক শীর্ষ কর্তা। বেতন বাড়ানোর প্রলোভন পাওয়া এক ফুটবলার নাম প্রকাশ না করাত শর্তে দেশ রূপান্তরকে বলেছেন, 'আমাকে আজকে বাফুফের এক কর্মকর্তা মাসিক বেতন অনেক বাড়িয়ে চুক্তি করার কথা বলেছেন। তবে আমি কোন প্রলোভনে ভুলছি না। আমরা বাফুফের সভাপতির দিকে তাকিয়ে আছি। তার সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায় আছি। আশা করছি তিনি ন্যায়বিচার করবেন।'

তাদের বাদ দিয়ে জুনিয়রদের সঙ্গে চুক্তি করায় কিছুটা হতাশ হলেও নিজেদের অবস্থান থেকে সরে না আসার সিদ্ধান্তে অনড় থাকছেন মেয়েরা। একই সঙ্গে নিজে থেকে বাফুফে ছেড়ে যাবেন না বলে জানিয়েছেন একাধিক ফুটবলার। এক ফুটবলার বলেন, 'এই চুক্তির মধ্য দিয়ে আমাদের ঐক্য ভাঙার চেষ্টা চলছে বুঝতে পারছি। অনেককে নানা প্রলোভনও দেখানো হচ্ছে। তবে এসবে আমরা কেউ ভুলছি না। আমরা বাফুফের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছি। বাফুফে যদি চলে যেতে বলে তাহলেই সসম্মানে চলে যাবো। মনে করবো ফুটবলে আমাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে। তার আগে আমরা যাচ্ছি না। এর শেষ দেখে যেতে চাই।'

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত