শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

ইজতেমার প্রথম দিনেই পবিত্র শবে বরাত, মুসল্লিদের মধ্যে বাড়তি আমেজ

আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:১৮ এএম

নিজামুদ্দিন মারকাজ অনুসারীদের (সাদ কন্ধলভীর পন্থী) শুক্রবার থেকে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। এর আগে বুধবার থেকে বিভিন্ন জেলার মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে আসতে থাকেন। বিশেষ করে বিদেশি বিপুলসংখ্যক মুসল্লি বৃহস্পতিবার রাত থেকে ময়দানে এসে অবস্থান নেন। আজ ইজতেমা ময়দানে বৃহত্তম জুমার নামাজ আদায় করা হবে। এতে গাজীপুর ও আশপাশের এলাকার লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেবেন।

এদিকে ইতিহাসে এবারই প্রথম শবে বরাতের রজনীতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি শুক্রবার রাতে টঙ্গীর তুরাগ তীরে ইজতেমার ময়দানে একসাথে পবিত্র শবে বরাত পালন করবেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সারা দেশ থেকে লাখ লাখ মুসল্লি ময়দানে জড়ো হন। পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ এই রজনীতে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হওয়ায় মুসল্লিদের মাঝে বাড়তি এক আবেগ কাজ করছে।

ঢাকা ও গাজীপুরের আশপাশের লাখো মুসল্লি মাগরিবের নামাজের পর থেকে ইজতেমার ময়দানে অবস্থান করবেন। বিশ্ব ইজতেমার এই পর্বে অংশ নিচ্ছেন তাবলীগ জামাতের মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা।

ইজতেমায় একসাথে পবিত্র শবে বরাতে পরম করুণাময় মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত ও জিকিরে মগ্ন হবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। অতীতের পাপ ও অন্যায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনা করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মোনাজাত করবেন খিত্তায় খিত্তায়। ইতোমধ্যে ইজতেমার ময়দানে ভারতের নিজামুদ্দিন বিশ্ব মারকাজ ও পাকিস্তানের শীর্ষ মুরুব্বিগণ উপস্থিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার যোহরের নামাজের পর কাকরাইল মসজিদের বর্ষিয়ান মুরুব্বি মাওলানা মোশাররফ হোসেনের স্বাগতিক বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আসরের পাকিস্তানের আহলে শূরা মাওলানা শায়েখ হারুন কোরাইশির বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার মূল বয়ান শুরু হয়।

তাবলীগের দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়ক মো. সায়েম বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমার ইতিহাসে এবারই প্রথম ইজতেমা চলাকালীন আমরা শবেবরাত পাচ্ছি। ইজতেমা মাঠে উপস্থিত লাখো মানুষ একসঙ্গে শবেবরাতের নামাজ পড়বেন। নামাজ শেষে একসঙ্গে রোজা রাখবেন, বড় জামাতে জুমার নামাজ আদায় করবেন। এটা অনেক বড় পাওয়া।’

মুসলমানরা হিজরি বর্ষের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে পালন করে থাকেন। মহিমান্বিত এ রাতে মহান রাব্বুল আলামিন তার বান্দাদের ভাগ্য নির্ধারণ করেন। পবিত্র শবে বরাত মুসলমানদের কাছে পবিত্র রমজানের আগমনী বার্তাও নিয়ে আসে। শাবান মাসের পরে আসে পবিত্র রমজান মাস। তাই শবে বরাত থেকেই কার্যত রমজানের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। বিশ্ব ইজতেমা ও শবে বরাত একসাথে হওয়ায় এবার মুসল্লিদের মাঝে বাড়তি ধর্মীয় আবেগ ও অনুভূতি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই। বৃহস্পতিবার রোজা রেখে শুক্রবার ইজতেমার ময়দানে একসাথে কয়েক লক্ষ মুসল্লি দেশের সর্ব বৃহৎ জুম্মার নামাজ পড়বেন।

ইজতেমায় যারা বয়ান করবেন

তাবলীগের দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়ক মো. সায়েম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ময়দানে খিত্তায় খিত্তায় তালিম হয়, বিদেশে সাথীদের জায়গায় আলাদা আলাদা ভাষায় তালিম হয়েছে। জহুরের নামাজের পরে আগত সাথীদের উদ্দেশ্যে বয়ান করেন মাওলানা মোশাররফ সাহেব (কাকরাইল), আসরের নামাজের পরে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানের মাওলানা হারুন এর বয়ানের মধ্যদিয়ে ইজতেমা শুরু হয়। তার বয়ান তরজমা করেন মাওলানা আব্দুল্লাহ সাহেব চাঁদপুরী। মাগরিবের পর বয়ান করেন মাওলানা ইয়াকুব সিলানী (নিজামউদ্দিন)। তার বয়ান তরজমা করেন মাওলানা মনির বিন ইউসুফ।

শুক্রবার ফজরের পর বয়ান করেন মাওলানা আব্দুস সাত্তার (নিজামুদ্দিন)। তার বয়ান তরজমা করেন মুফতি আজিম উদ্দিন, জুমার নামাজের পর বয়ান করবেন ওয়াসিফুল ইসলাম (কাকরাইল)। আসর নামাজের পর বয়ান করবেন হাফেজ মনজুর (নিজামুদ্দিন)। তরজমা করবেন হাফেজ মনজুর, বাদ মাগরিব বয়ান করবেন মাওলানা জমশেদ (নিজামুদ্দিন)। তার বয়ান বাংলায় তরজমা করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মুনির বিন ইউসুফ।

শনিবার বাদ ফজর বয়ান করবেন মোরসালিন সাহেব (নিজামুদ্দিন)। বাদ জোহর আরব মেহমান বয়ান করবেন। বাদ আসর বয়ান করবেন মাওলানা মনির বিন ইউসুফ (কাকরাইল) এবং বাদ মাগরিব বয়ান করবেন মাওলানা আব্দুস সাত্তার (নিজামুদ্দিন)। আসরের পর পড়ানো হবে যৌতুক বিহীন বিয়ে।

রবিবার আখেরি মোনাজাতের দিন ফজরের নামাজের পর বয়ান করবেন মুফতি রিয়াসাত (নিজামুদ্দিন) হেদায়েতের কথা ও দোয়া পরিচালনা করবেন মাওলানা জামশেদ (নিজামুদ্দিন)।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত