গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানান্তর না করেই, উপত্যকাটি পুনর্গঠনে পরিকল্পনা তৈরি করছে মিসর। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখলের প্রস্তাবের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে এ উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটি। মিসরের রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র আল-আহরাম জানায়, প্রস্তাবটিতে গাজার ভেতরে নিরাপদ এলাকা তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। যেখানে ফিলিস্তিনিরা প্রাথমিকভাবে বসবাস করবে, যতক্ষণ না মিসরীয় ও আন্তর্জাতিক নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলো গাজার ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামো পুনরুদ্ধার করে।
এ পরিকল্পনা নিয়ে সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাশাপাশি ইউরোপীয় কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দুজন মিসরীয় কর্মকর্তা এবং আরব ও পশ্চিমা কূটনীতিকরা। তহবিল সংগ্রহের জন্য একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে। মিসরের প্রস্তাবের লক্ষ্য হলো ট্রাম্পের ভুল যুক্তিকে খণ্ডন করা এবং গাজার ভৌগোলিক ও জনমিতিক কাঠামো পরিবর্তনের যেকোনো প্রচেষ্টার রুখে দেওয়া। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ জ্ঞাত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এটি এখনো আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। তবে এটির বাস্তবায়ন হলে নিজেদের ভূমিতে পুনর্বাসন ও উন্নত জীবনযাপনের সুযোগ পাবে গাজার জনগণ, যা ট্রাম্পের গাজা দখল ও জনশূন্য করার পরিকল্পনার সম্পূর্ণ বিপরীত।
মিসরের প্রস্তাবের অন্যতম প্রধান অংশ হলো একটি নতুন ফিলিস্তিনি প্রশাসন গঠন করা, যা হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্র্তৃপক্ষের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত হবে না। এ ছাড়া একটি ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এতে মিসরীয় ও পশ্চিমা প্রশিক্ষিত বাহিনীও অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। ফ্রান্স ও জার্মানি এ বিকল্প পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছে। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। চলতি সপ্তাহে রিয়াদে অনুষ্ঠিতব্য একটি বৈঠকে মিসর, সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্ডানের কর্মকর্তারা এ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করবেন। এরপর এটি চলতি মাসের শেষদিকে আরব শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে।
এদিকে ট্রাম্পের গাজা খালি করার প্রস্তাব নিয়ে ইসরায়েল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সেই সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা এবং মধ্যপ্রাচ্যে দেশটির প্রভাব ঠেকাতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে মন্তব্যও করেন তিনি।