সাভারের আশুলিয়ায় সুবর্ণা আক্তার (৩৫) নামের এক নারী শ্রমিককে কারখানার সামনে থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুই নারী শ্রমিক। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নিহতের সহকর্মীরা প্রায় দুই ঘণ্টা নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
আজ সোমবার সকাল থেকে আশুলিয়ার তানজিলা টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার সামনে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।
নিহত নারী শ্রমিক সুবর্ণা আক্তারের গ্রামের বাড়ি চাপাইনবাবগঞ্জ বলে জানা গেছে। তিনি আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকায় স্বামী স্বামী সুমনের সঙ্গে সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থেকে কবিপুর এলাকার তানজিলা টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার ফিনিশিং শাখায় কিউসি পদে চাকরি করতেন। তবে আহত দুইজনের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা জানায়, সোমবার ভোর রাত ৩টার দিকে কারখানা থেকে বের হওয়ার সময় একটি অটোরিকশায় ৩ নারী শ্রমিককে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে সুবর্ণা আক্তার নামে ওই নারী শ্রমিককে হত্যা করে সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় তার সঙ্গে থাকা অপর দুই নারী শ্রমিক আহত হলে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা আরও জানান, রাতের ডিউটি শেষ করে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা ৩ নারী শ্রমিককে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার পর সকালে কারখানার পাশের রাস্তায় সুবর্ণার নিথর দেহ পরে থাকতে দেখেন শ্রমিকরা। এ সময় তার লাশ উদ্ধার করে কারখানার সামনে নিয়ে আসেন এবং আহত দুই নারী শ্রমিককে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান। পরে নিহতের সহকর্মীরা লাশ নিয়ে কারখানার সামনের মহাসড়ক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, কারখানা কর্তৃপক্ষ কখন কোন শ্রমিকের ছুটি দেবে তা জানতে পারা যায় না। কখনও রাত দুইটায়, আবার কখনও তিনটায় ছুটি দেওয়া হয়। কখনও দুইজন শ্রমিককে আবার কখনো পাঁচ জন শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়। কারখানার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে এ রকম হচ্ছে। অবিলম্বে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করার দাবি জানান শ্রমিকরা।
এদিকে অবরোধের কারণে মহাড়কটির উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসডক থেকে সড়িয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। দুই ঘণ্টা অবরোধের পর শ্রমিকরা লাশ নিয়ে কারখানার ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
পরে শোনা যায় তানজিলা টেক্সটাইল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মনিরুজ্জামান শ্রমিকদের তোপের মুখে কারখানার ভেতর আটকা পড়েছেন। কিন্তু একাধিকবার তার মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, সুবর্ণা কীভাবে নিহত হয়েছেন, বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। উত্তেজিত শ্রমিকদের বুঝিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে।