মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

ঈশ্বরদীতে চরের আধিপত্য নিয়ে দুই পক্ষের গোলাগুলি, ককটেল বিস্ফোরণ

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৭:৪০ পিএম

পাবনার ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের ডিগ্রির চরের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টা থেকে শুরু হয়ে রাত আড়াইটা পর্যন্ত লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের চরকুড়লিয়া গ্রামের নছিরের ঘাট ও আকাতের ঘাটের দেড় কিলোমিটার সীমানার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

শনিবার (১৫ মার্চ) সকাল থেকে দুই পক্ষের শক্তি প্রদর্শনের মহড়া শুরু হয়। এ সময় প্রতিপক্ষরা বেশ কয়েকটি বাড়িতে গিয়ে হুমকি-ধামকি দেয়। রাস্তায় হামলার শিকার হন চরকুড়লিয়া গ্রামের মৃত আমিন মন্ডলের ছেলে সাহাবুল ইসলাম (৩৮)সহ দু’জন। এদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় দুই পক্ষের মহড়ায় গ্রামবাসীর মধ্যে নতুনভাবে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ভয়ে অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চরকুড়লিয়া গ্রামের জোতদার কৃষক সাইদুর রহমান ও কুষ্টিয়ার হরিপুর ইউনিয়নের মুকুল গ্রুপের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। আবার এই দুই গ্রুপের মধ্যেই স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীরা রয়েছেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর লক্ষীকুন্ডা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কিছু নেতাকর্মী ‘খোলস’ পাল্টে বিএনপির সঙ্গে মিলেমিশে চর এলাকায় প্রভাব বিস্তারে শক্তি প্রদর্শন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দু’দিন আগে জেলার অন্যতম বৃহৎ লক্ষীকুন্ডার তালবাড়িয়া সরকারি খাস জমি প্রকাশ্যে ইজারা দেওয়া হয়। ইজারার পর থেকে এলাকায় ওই খাসজমি বণ্টন এবং আধিপত্য নিয়ে সাইদুর ও মুকুলের সঙ্গে দৃশ্যমান দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এরই জের ধরে শুক্রবার দিবাগত রাত পৌন ১২টার দিকে ঈশ্বরদী শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে লক্ষীকুন্ডার ‘নছিরের ঘাট’ ও ‘আকাতের ঘাট’ এলাকায় সাইদুর গ্রুপ ও মুকুল গ্রুপের সমর্থকেরা মহড়া দিতে শুরু করে। রাত ১২টার দিক থেকে শুরু হয় গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ। এভাবে রাত আড়াইটা পর্যন্ত দুই পক্ষের বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পান এলাকার অনেকেই। এতে চরের গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এলাকাবাসী জানান, শব্দ এত প্রকট ছিল যে, আমরা ভয়ে ঘরের মধ্যে লুকিয়ে ছিলাম। তবে শব্দ শুনে মনে হয়েছে এগুলো গুলি ও ককটেলের শব্দ।

লক্ষীকুন্ডা বিট পুলিশিংয়ের ইনচার্জ (এসআই) জামাল মিয়া জানান, খবর পেয়ে তিন গাড়ি পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে যায় ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। তবে পুলিশ এসময় কাউকে খুঁজে পায়নি। স্থানীয়রা আমাদের জানান- এলাকার সাইদুর রহমান ও কুষ্টিয়ার মুকুল গ্রুপের মধ্যে স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় ও আধিপত্য নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।

এ সম্পর্কে বক্তব্য নিতে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে মুকুলের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মুকুলের প্রতিপক্ষ সাইদুর রহমান মুঠোফোনে জানান, রাতের ঘটনার সঙ্গে তার কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। বরং প্রতিপক্ষরা তাদের লোকজনকে চর এলাকায় যেতে দিচ্ছে না।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহীদ বলেন, ঘটনা সম্পর্কে শুনেছি। এলাকার আধিপত্য নিয়ে ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা জেনেছি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত