শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

সহিংসতার শিকার নারীরা নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন: মহিলা পরিষদ

আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৫, ০১:০৭ পিএম

নারী নির্যাতন প্রতিরোধের কাজ বহুমাত্রিক। মামলার দীর্ঘসূত্রিতা কমানো, সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক প্রতিরোধ শক্তিশালী করতে হবে।  সহিংসতার শিকার নারীরা নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন।  

নারী নির্যাতন প্রতিরোধ এবং আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রমকে আরও কার্যকর ও গতিশীল করার লক্ষ্যে আয়োজিত মহিলা পরিষদের মতবিনিময় সভায় এইসব বিষয় বলেন বক্তরা।  রবিবার ১৬ (মার্চ)  বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আনোয়ারা বেগম-মুনিরা খান মিলনায়তনে সংগঠনের প্যানেল আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এবং লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম।

প্যানেল আইনজীবীদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. এস. এম. এ. সবুর, ব্যারিস্টার এ কে রাশেদুল হক, অ্যাড. মো. আমিনুল ইসলাম, অ্যাড. এ. কে. এম. সোহেল আহাম্মেদ, অ্যাড. আহাম্মদ হাশেম রাজা, অ্যাড. মো. নূর উদ্দিন প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধের কাজ বহুমাত্রিক। মামলার দীর্ঘসূত্রিতা কমানো, সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক প্রতিরোধ শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিচার প্রক্রিয়ার গতিশীলতা আনতে আইনি কাঠামোতে পরিবর্তন আনা এবং সমাজের সকল স্তরের সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কিছু অগ্রগতি হলেও এখনো বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান। প্যানেল আইনজীবীরা সুপারিশ তুলে ধরবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. এস. এম. এ. সবুর বলেন, বর্তমানে বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ফরেনসিক রিপোর্ট, ডিএনএ পরীক্ষা, সাক্ষ্যগ্রহণের বিলম্ব কমিয়ে মামলার নিষ্পত্তি ত্বরান্বিত করা প্রয়োজন।

অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম উল্লেখ করেন, সহিংসতার শিকার নারীরা প্রথম থেকেই নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন। আইনি সহায়তার ক্ষেত্রে তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং প্রসিকিউশন টিমের দক্ষতা বাড়াতে হবে। তিনি আরও জানান, ২০২৪ সালের সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ব্যক্তিগত আইনজীবী নিয়োগের অনুমতি থাকলেও বাস্তবে তা কার্যকর করতে নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।

লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা বলেন, নির্যাতিত নারীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়, কাউন্সেলিং এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাল্টিসেক্টরাল কোয়ালিশন গঠনের প্রয়োজন। প্যানেল আইনজীবীরা এ বিষয়ে পরামর্শ ও সহায়তা করতে পারেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সভায় উপস্থিত প্যানেল আইনজীবীরা মামলার ক্ষেত্রে ভিকটিমের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগের বিধান কার্যকর করা, তদন্ত কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি, এজাহার ও চার্জশিটে বৈপরীত্য দূর করা, ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এই মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ, সম্পাদকমণ্ডলী, প্যানেল আইনজীবীবৃন্দসহ মোট ৪০ জন উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত