বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ধর্ষকদের বিচার কার্যকর এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন কঠোর করার দাবিতে আশুলিয়ায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে গণসংহতি আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। সোমবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় গণসংহতি আন্দোলনের ব্যানারে আশুলিয়ার বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় সমাবেশ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে সাভার-আশুলিয়াসহ সারাদেশে নারী ও শিশু ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন উপস্থিত নেতা-কর্মীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশে দলটির সাভার উপজেলার নির্বাহী সমন্বয়কারী রোকনুজ্জামান মনি বলেন, শিশু আছিয়ার ঘটনা আমাদের সারাদেশের মানুষকে কাঁদিয়েছে। আশুলিয়াতেও গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটলো। এখানেও ৭-৮ বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযোগে তার এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সৎ বাবার দ্বারা দুই জায়গা ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হলো, মুদি দোকানদারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা হলো। এই ঘটনাগুলো পরপর কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় ঘটলো। এসব ঘটনাগুলো আমাদের শঙ্কিত করছে। আমরা আমাদের মেয়েদের নিয়ে, সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে এখন বেশ চিন্তিত।
দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়ে গণসংহতির এই নেতা আরও বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে ধর্ষণের মামলা তদন্তের সময় ৩০ দিন থেকে কমিয়ে ১৫ দিন এবং মামলার বিচার কাজ শেষ হওয়ার সময় ১৮০ দিন থেকে কমিয়ে ৯০ দিন করতে হবে। মামলার বিচার কেবল দ্রুতই নয়, বিচারটা যাতে নিশ্চিত ও যথাযথ হয় সে লক্ষ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন আরও কঠোর করতে হবে। এছাড়া নিরপরাধ কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশে নিরাপদ কর্মক্ষেত্র নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির আশুলিয়া অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, যেভাবে নারী ও শিশুদের প্রতি নির্যাতন বাড়ছে, তা আমাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। নারীরা অনিরাপত্তায় ভুগছেন। এই পরিবেশ দেশের জন্য ভালো না। আমরা আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির উন্নতি এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ।
গণসংহতি আন্দোলন সাভার উপজেলার সমন্বয়কারী এফ এম নুরুল ইসলাম বলেন, প্রত্যেক ধর্ষণ মামলার বিচারে ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত মামলার বিচারকার্য সম্পন্ন করে সব ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে ‘নারী ও শিশু নিপীড়নবিরোধী সেল’ গঠন ও সেলের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে।
অন্যদিকে ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাইবার বুলিং সংক্রান্ত আইনের সংশোধন করে অপরাধের স্পষ্ট ও যথাযথ সংজ্ঞায়নের দাবি জানান গণসংহতি আন্দোলনের আশুলিয়া থানার সহ-নির্বাহী সমন্বয়কারী আবু তারেক।
