ইন্দোনেশিয়ায় এখন থেকে বেসামরিক পদে আরও বেশি হারে নিয়োগ পাবেন দেশটির সামরিক কর্মকর্তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি সামরিক বিলের সংশোধনী অনুমোদন করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। এর মধ্য দিয়ে সরকারের কার্যক্রমে আরও বেশি ভূমিকা রাখার ক্ষমতা পেল দেশটির সামরিক বাহিনী।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বিলটি নিয়ে সুশীল সমাজে কঠোর সমালোচনা চলছে। তাদের দাবি, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশকে স্বৈরশাসনের দিকে নিয়ে যেতে পারে এই বিল। তাদের আশঙ্কা, সামরিক কর্মকর্তারা বেসামরিক ক্ষেত্র দাপিয়ে বেড়ালে সাবেক প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর মতো আরেকটি যুগ দেখা দিতে পারে। ১৯৯৮ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ৩২ বছর স্বৈরতন্ত্র চালিয়েছিলেন তিনি। ইন্দোনেশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো সামরিক বাহিনীর এই ভূমিকা আরও বিস্তৃত করেছেন। সুহার্তোর আমলে বিশেষ বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন তিনি। এই আইনে বলা হয়েছে, এখন থেকে সেনাবাহিনী অবসর না নিয়েই বা চাকরি না ছেড়েই সরকারের কোনো পদে থাকতে পারবেন সামরিক বাহিনীর যে কেউ। সংশোধনী অনুমোদন করার আগে গত বুধবার এর বিরুদ্ধে রাস্তায় ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা যায়। উইলসন নামে
রাস্তায় নামা এক অ্যাকটিভিস্ট বলেন, ‘গণতন্ত্রের মূল কথা হলো, সেনাবাহিনীর রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করা উচিত নয়। সেনাবাহিনীর কেবল ব্যারাক এবং জাতীয় প্রতিরক্ষা পরিচালনা করা উচিত।’ ১৯৯৮ সাল থেকে গণতন্ত্রের ওপর এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এবং আজ তার চরম শিখরে পৌঁছেছে। প্রতিনিধি পরিষদ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। সংশোধনীতে সক্রিয় সামরিক কর্মীদের ১০ থেকে বাড়িয়ে ১৪টি বেসামরিক প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত থাকার অনুমতি দেয়। বেশিরভাগ পদের জন্য অবসরের বয়স কয়েক বছর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ পদমর্যাদার জেনারেলরা এখন ৬৩ বছর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। গত ২৫ বছর ধরে রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থায় সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা সীমিত করার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইম্পারসিয়াল বলছে, আইন সংশোধনের আগেও প্রায় ২ হাজার ৬০০ সক্রিয়-কর্তব্যরত কর্মকর্তা বেসামরিক ভূমিকায় কর্মরত ছিলেন।