বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

ধর্ষণের শিকার শিশুর বসতঘরে আগুন, আটক এক

আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৩ পিএম

কুষ্টিয়ার খোকসায় বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে প্রতিবেশী দাদার ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুর বসতঘর রাতের আঁধারে আগুনে পুড়িয়ে ভস্মিভুত করার অভিযোগে ধর্ষণ মামলার এজাহার নামীয় গ্রেপ্তার আফজাল কাজীর ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ। 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলিশ পরিদর্শক শেখ মঈনুল ইসলাম জানায়, ‘শনিবার (৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টায় বসতঘর পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক তারেক কাজীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

শুক্রবার গভীর রাতে আগুনে পুড়ে যায় একমাত্র মাথা গোঁজার ঘরটি। ঘটনার সময় ওই শিশুটি তার মায়ের সাথে অন্যত্র থাকায় প্রাণে বেঁচে যায়। শিশুটির অপর বোনটি ছিল নানাবাড়ি এবং ছোট বোন ছিল চাচার বাড়িতে।

খোকসা উপজেলার গোপগ্রাম ইউনিয়নেও ওই বাড়িতে ভুক্তভোগী আট বছরের শিশুকন্যা ও তার মাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পরিবারের নিকটজনেরাও কিছু বলতে রাজি হননি। 

সরেজমিনে দেখা যায়, গাছপালা বেষ্টিত একটি বাগানের মধ্যে মাথা গোঁজার একমাত্র ঘর ও পাশের রান্নাঘরটি আগুনে পুড়ে ভস্মিভূত হয়ে গেছে। আগুনে পোড়া কিছু বাঁশের খুঁটি দাঁড়িয়ে থেকে জানান দিচ্ছে এখানে কারো মাথা গোজার ঠাঁয় ছিল। অর্ধপোড়া বিছানাপত্র থেকে বোঝা যায় আগুনের ভয়াবহতা কেমন ছিল।

পাশের বাড়ির শিশুর চাচা বলেন, ‘২-৩ দিন শিশুটির সঙ্গে হওয়া ঘটনায় ছুটাছুটি করে শুক্রবার সন্ধ্যায় সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। গভীর রাতে লোজনের চিৎকারে ঘুম ভেঙে দেখতে পায় ভাইয়ের ঘরে আগুন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আজিবর রহমানের অভিযোগ, কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তা ছাড়া ঘটনার সময় ওই বাড়িতে কেউ ছিল না। কোন রান্নার কাজও হয়নি সেদিন, তাহলে গভীর রাতে আগুন লাগবে কী করে। ধর্ষণের শিকার শিশুটির বিচার দাবিও করেন এই ইউপি সদস্য। 

খোকসা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পুলিশ পরিদর্শক শেখ মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের সংবাদ পাওয়ার পর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত এজাহার নামীয় আফজাল কাজীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ইতোমধ্যে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে হঠাৎ করে বাড়িটি আগুনে পুড়ে ভস্মিভূত হয়েছে বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার আফজাল কাজীর ছেলে তারেক কাজীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এদিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম বলেন, ‘খোকসা থেকে আসা শিশুটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদানসহ ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ায় তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শিশুর ওপর যৌন নির্যাতনের আলামত পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) রাতে উপজেলা ঘটে যাওয়া শিশু ধর্ষণের ঘটনাটি বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি জানাজানি হয়। পরদিন ধর্ষককে গ্রেপ্তার দাবিতে আফজাল কাজীর বাড়ি ঘেরাও করে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে আফজাল কাজীকে (৫৫) আটক করে খোকসা থানা পুলিশ। পরে শিশুকন্যার মা বাদী হয়ে শিশু ধর্ষণের অভিযোগ এনে আফজাল কাজীর নাম উল্লেখসহ খোকসা থানায় মামলা করেন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত