সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে তিনি মাঠে নামেননি, কিন্তু উপস্থিত ছিলেন। আর সেখানে উপস্থিত থেকেই শুনলেন তুমুল দুয়ো। রিয়াল মাদ্রিদের সবচেয়ে আলোচিত তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে যেন সময়ের বিরুদ্ধে লড়ছেন এখন।
আসলে আর্সেনালের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায়ের পর থেকেই পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে উঠেছে। ভক্তদের একাংশের চোখে এমবাপ্পে হয়ে উঠেছেন বিদায়ের অন্যতম ‘দায়ী’। সেই ক্ষোভই যেন উগরে দেওয়া হলো অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে লা লিগা ম্যাচেও।
ম্যাচের ১৮তম মিনিটে টিভি ক্যামেরা যখন তাকে বক্সে দেখায়, তখনই শুরু হয় হুইসেলের সুর। চারদিক থেকে ভেসে আসে দুয়ো। এমনকি, মৌসুমে ৩৩ গোল করেও যেন জনরোষ থেকে মুক্তি মিলছে না ফরাসি ফরোয়ার্ডের।
এই ম্যাচে মাঠে না নামার পেছনে ছিল দুটি কারণ। আলাভেসের বিপক্ষে আগের ম্যাচে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় আন্তোনিও ব্লাঙ্কোর ওপর মারাত্মক ট্যাকেলের জন্য সরাসরি লাল কার্ড দেখেছিলেন এমবাপ্পে। পাশাপাশি, আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যাচে পাওয়া হালকা গোড়ালির চোটও বিবেচনায় রেখেছে মেডিকেল টিম। সামনে ২৬ এপ্রিলের কোপা দেল রে ফাইনাল—সেই লক্ষ্যেই ঝুঁকি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত।
তবে এসব কারণ মানতে নারাজ গ্যালারি। কেবল পারফরম্যান্স নয়, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে এমবাপ্পের পেশাদারিত্ব ও দলের প্রতি কমিটমেন্ট নিয়ে। যে বার্নাব্যু এক সময় অপেক্ষায় ছিল তার জন্য, সেই স্টেডিয়ামই এখন রাগ দেখাচ্ছে তাকে।
গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ক্যামেরায় ধরা পড়ে তার গম্ভীর মুখ, কপালের ভাঁজ, আর সময়মতো উঠে আসা বিরক্তি মেশানো অঙ্গভঙ্গি। তবে ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে ফেডে ভালভার্দের গোল যখন রিয়ালকে জয় এনে দেয়, তখনই দেখা যায় এক ভিন্ন এমবাপ্পেকে—হঠাৎ উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়া, যেন নিজেকেও কিছুটা প্রমাণের তাগিদ থেকে।
এখন প্রশ্ন, এই উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেবে? সম্পর্ক হয়তো এখনো ভাঙেনি, তবে হুমকির মুখে ঠিকই। কোপা দেল রে ফাইনাল এমবাপ্পের সামনে বড় এক সুযোগ—সমর্থকদের আস্থা ফেরানোর, আর প্রমাণ করার যে কেন এত অপেক্ষা ছিল তার জন্য।
ভুল করার জায়গা এখন আর নেই। মঞ্চ প্রস্তুত, চোখের সামনে চ্যালেঞ্জ। এখন দেখার পালা, এমবাপ্পে কীভাবে জবাব দেন মাঠে।