অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় একদিনে অন্তত আরও ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গণহত্যামূলক আগ্রাসনে গাজায় প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ২৬৬ জনে।
গতকাল বুধবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এবং তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু এ তথ্য জানিয়েছে।
ইশরাক হোসেনের গেজেট প্রকাশে মত চেয়েছে ইসিআল জাজিরা জানায়, গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। এর অংশ হিসেবে তারা গাজা শহরের আল ডোরা শিশু হাসপাতালেও হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার গাজা উপত্যকাজুড়ে এই হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩২ জন ফিলিস্তিনি।
এছাড়া গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে আনাদোলু জানিয়েছে, চলমান আক্রমণে আরও অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসাব অনুসারে, ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৯১ জনে। এখনও অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় পড়ে থাকলেও, নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি বিমান হামলা শুরু করে তেল আবিব। ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪ হাজার ৯৫০ জন আহত হয়েছেন।
দীর্ঘ ১৫ মাসের সামরিক অভিযানের পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে আবারও আক্রমণ শুরু করে তারা। হামাসের সঙ্গে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে মতানৈক্যের জেরে এই সহিংসতা শুরু হয় বলে মনে করা হচ্ছে।
জাতিসংঘ বলছে, চলমান আগ্রাসনের কারণে গাজার ৮৫ শতাংশের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এছাড়া উপত্যকার ৬০ শতাংশ অবকাঠামো আংশিক বা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
অবরুদ্ধ গাজায় পরিচালিত এই আগ্রাসনের দায়ে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হয়েছে।
