মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

ফ্যাসিবাদের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি : রিজভী

আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২৩ এএম

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘কখনো কখনো আবারও ফ্যাসিবাদের কণ্ঠের আওয়াজ শুনতে পাই, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও বিপজ্জনক বটে।’ গতকাল শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবদুল্লাহ বিন জাহিদের ক্যানসার আক্রান্ত ছোট ভাই মাহমুদুল্লাহ বিন জিসানের চিকিৎসা ও অপারেশনের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’।

অনুষ্ঠানে রিজভী বলেন, ‘কোনোভাবে ফ্যাসিবাদের আওয়াজ বাংলাদেশে ওঠে তাহলে জাহিদের আত্মার কাছে আমরা কী জবাব দেব? আহনাফ, আবু সাঈদ, ওসমান গণির আত্মার কাছে কী জবাব দেব? জবাব আমরা দিতে পারব না! যাদের কারণে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তারা আজও কেন ধরাছোঁয়ার বাইরে? যারা ফ্যাসিবাদকে স্থায়ীত্ব দেওয়ার জন্য কাজ করে গেছেন তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হয়নি।’ সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আমাদের ক্রন্তিকাল এখনো শেষ হয়নি। মোটামুটি একটা স্বস্তির মধ্যে থাকলেও এখনো ৬০ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীর নামে থাকা মামলা থেকে অব্যাহতি পায়নি। এখনো কেন প্রত্যাহার হচ্ছে না? শেখ হাসিনার দোসরদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ করছেন না, সেখানে প্রশাসন নিয়োগ দেন। চালু রাখেন বা টেকওভার করেন। যাতে শ্রমিক-কর্মচারীরা ছাঁটাই না হয়।’

রিজভী বলেন, ‘আজও কেন বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়নি? উনি গণতন্ত্রের ধারা বন্ধ করে দিয়ে শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়ে গেছেন? দেশি ও বিদেশি গণতন্ত্রবিরোধী চক্রান্তে সুপরিকল্পিতভাবে খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের আইন থাকলেও গণতন্ত্র একটা স্পেস পেত। জুলাই গণহত্যায় তিনিই প্রধান ও সবচেয়ে বড় দায়ী। শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ কায়েম করার জন্য তারা সুযোগ করে দিয়ে গেছেন।’ তিনি বলেন, ‘বিচারপতি আসাদুজাম্মান মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সাজা দিলেন। এরপর হাইকোর্টের আরেকজন বিচারপতি এনায়েত সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করলেন। এরা কেন আজও ধরাছোঁয়ার বাইরে। এরাই গণতন্ত্র হত্যাকারী, শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ কায়েমের হাতকে শক্তিশালী করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ, কেএম নুরুল হুদা কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? এরাই তো হচ্ছে নির্বাচন ধ্বংসকারী। ন্যূনতম শহীদের মর্যাদা দিতে তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। পৃথিবীর যে প্রান্তে থাকুক না কেন এসব গণতন্ত্রবিনাসী দানবদের গ্রেপ্তার করার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের। সেই উদ্যোগ এই দেশবাসী দেখতে চায়।’

রিজভী বলেন, ‘এখনো তো আদালত, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর কারও কোনো হস্তক্ষেপ নেই। তাহলে মূল অপরাধীরা কেন আজও বাইরে? গত ১৬ বছর শেখ হাসিনার মতো রক্তপিসাসু নারী যিনি ছোট বাচ্চাদের গুলি করে হত্যা করতে দ্বিধা করেনি, তাকে যারা সহায়তা করেছে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে কেন? এটা হতে পারে না।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত