সিলেটে জিম্বাবুয়ের কাছে বিব্রতকরভাবে হেরে যাওয়া প্রথম টেস্টে বল হাতে নিজের চেনা রূপে ছিলেন না তাইজুল ইসলাম। ওই টেস্টে দুই ইনিংসে পাঁচটি করে মোট দশ উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। যেখানে তাইজুল পেয়েছিলেন মাত্র দুই উইকেট। সেই খেদ তিনি মিটিয়েছেন চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে। ক্যারিয়ারের ১৬তম পাঁচ উইকেট শিকারের পর সমালোচকদেরও এক হাত নিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘এতগুলো টেস্ট খেলার পর একটা ম্যাচ দেখে যারা সমালোচনা করে আমার মনে হয় না তারা খেলা বোঝে।’
সিলেট টেস্টে প্রথম ইনিংসে ১০ ওভার বল করে ৫৩ রান দিয়ে তাইজুল ছিলেন উইকেটশূন্য। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬ ওভার বল করে ৭০ রানে পান ২ উইকেট। বিপরীতে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে তাইজুল যেন দ্যুতিময়। প্রথম সেশনে ফেরান বেন কারেনকে। দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশ কোনো উইকেট শিকার করতে পারেনি। এক পর্যায়ে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ছিলো ২ উইকেটে ১৭৭ রান, সেখান থেকে দিনশেষে সফরকারীরা করেছে ৯ উইকেটে ২২৭। শেষ সেশনে ৪০ রানের মধ্যে সফরকারীদের ৭ উইকেট তুলে নেওয়ার বড় কৃতিত্ব তাইজুলের।
পুরো দিনে ২৭ ওভার বল করে ৫ উইকেট নিতে তাইজুল দেন স্রেফ ৬০ রান। ম্যাচশেষে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই তৃপ্তির একটা বিষয়। কারণ সিলেটে আমি যেভাবে বোলিং করেছি, পঞ্চাশ টেস্ট খেলে ফেলা কারও জন্য ভালো কিছু নয়। তারপর ঘুরে দাঁড়িয়েছি, এটা ভালো লাগার বিষয়। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, দলকে সাহায্য করতে পেরেছি।’ জাগিয়েছিলেন হ্যাটট্রিক সম্ভাবনা। সেটি না হলেও আক্ষেপ নেই তাইজুলের কণ্ঠে, ‘আফসোস নেই। হ্যাটট্রিক জীবনে বারবার আসে না। হয় নাই, একটু খারাপ তো লাগতেই পারে।’
অসাধারণ বোলিংয়ের জন্য তাইজুলকে অভিনন্দন জানিয়ে তামিম ইকবাল ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে আন্ডাররেটেড বোলার। অন্যান্য বর্তমান বোলারদের পরিসংখ্যান দেখলে আমার মতামতটা বুঝতে পারবেন। আরেকটি ৫ উইকেট নেওয়ার জন্য তোমাকে অভিনন্দন, তাইজুল!’ তামিমের সঙ্গে একমত তাইজুলও, ‘হ্যাঁ, আমার কাছে ওটাই মনে হয় (আন্ডাররেটেড)।’
টেস্ট ক্রিকেটে এই নিয়ে ইনিংসে ১৬ বার পাঁচ উইকেট নিলেন তাইজুল, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পঞ্চমবার। এই তালিকায় এখন তিনি বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে টেস্ট ইতিহাসে পঞ্চম। পেছনে ফেলেছেন রবীন্দ্র জাদেজাকে। ৮০ টেস্ট খেলে ১৫ বার পাঁচ উইকেট নিয়েছেন ভারতের বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার। তাইজুল ছাপিয়ে গেলেন ৫৩ টেস্টে। ৮৬ টেস্টে ১৭টি ফাইফার নেওয়া ইংলিশ ক্রিকেটার ডেরেক আন্ডারউড আছেন তার উপরে। ৭১ টেস্ট খেলে ১৯টি ফাইফার রয়েছে দেশসেরা তারকা সাকিব আল হাসানের। সাকিব প্রসঙ্গে তাইজুল বলেন, ‘প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন যে আমি সেরাদের থেকে সেরা হবো। আমি কতটুকু ভালো করতে পারলাম সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমি চেষ্টা করবো যতদূর যেতে পারি। সাকিব ভাইকে ছাড়িয়ে যেতে হবে তেমন না। তিনি দেশের জন্য অনেক কিছু করেছেন। আমি চাই সবাই মিলে আমরা ভালো করি।’