মানিকগঞ্জের শিবালয়ে যমুনায় পানি বৃদ্ধির কারণে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। অনেক নতুন জনপদ, বসতবাড়ি, ফসলি জমি যমুনায় বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। ভাঙন রোধে সরকারি উদ্যোগ কম থাকায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু এলাকয় ভাঙন শুরু হয়েছে।
সোমবার (৫ মে) দুপুরে উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মালুচি, গাংধাইল, দক্ষিণ তেওতা, ঝিকুটিয়া, নিহালপুরসহ চরাঞ্চল আলোকদিয়া, মধ্যনগর, ত্রিশুরী এলাকায় যমুনায় ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদীপাড়ের মানুষ।
জানা গেছে, প্রতি বছর শুষ্ক মওসুমের পর যমুনায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে ভাঙন দেখা দেয়। এতে পদ্মা-যমুনা তীরবর্তী উপজেলার তেওতা, শিবালয়, আরুয়া ইউনিয়নের নদী সিকস্তি এলাকায় ভাঙন সৃষ্টি হয়। ভাঙন রোধে সরকারি উদ্যোগ বিলম্বিত হওয়ায় অনেক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, রাস্তা-ঘাট নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নদী পাড়ের বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বছর ভাঙন রোধে তেওতা ইউনিয়নের বিভিন্নস্থানে যথাসময়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এ ইউনিয়নের দক্ষিণ তেওতায় কিছু জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। কিন্তু যেখানে ভাঙন বেশী সেখানে আগে জিওব্যাগ ফেলা প্রয়োজন ছিল।
গাংধাইল গ্রামের শামসুল হক জানান, আগে বাড়ি ছিল চরে। সেখানের জায়গা নদীতে বিলীন হওয়ায় এপাড় এসে বাড়ি করেছি অনেক বছর। নদী ভাঙতে ভাঙতে আমাদের বাড়ির সামনে এসে গেছে।
দক্ষিণ তেওতার বাসিন্দা পারুল রাণী জানান, তার স্বামীরা ছয় ভাইয়ের একসময় দুই পাহি জমি ওপরে বাড়ি ছিল। যমুনায় ভেঙে এখন অর্ধেক পাহি জমিতে বসবাস করছেন। কখন জানি এ জমিটুকু নদীতে চলে যায়।
তেওতা ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন জানান, তেওতা ইউনিয়নের বিভিন্নস্থানে যমুনার ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলাসহ অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন জানানো হয়েছে। কয়েকটি স্থানে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও তা নিতান্ত কম।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের আরিচা পয়েন্টে গেজ রিডার ফারুক হোসেন জানান, গত এক সপ্তাহে পদ্মা-যমুনার পানি প্রায় ৫৮ সেন্টিমিটার বেড়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে পদ্মা-যমুনায় পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন দেশ রূপান্তরকে জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড উপজেলায় ৫টি পয়েন্টে কাজ শুরু করেছে। নতুন করে আরও কয়েকটি পয়েন্টে কাজ করার কথা বলা হয়েছে। তারা সরেজমিনে গিয়ে দেখবে। আগামী মার্চ-এপ্রিলের দিকে আরিচা থেকে জাফরগঞ্জ পর্যন্ত স্থায়ী বাঁধের কাজ শুরু হবে।