বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

আ. লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে সর্বত্র একই সুর 

  • আওয়ামী লীগের বিচারে ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনীর গেজেট
  • আইনের সংশোধনে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখার সাধুবাদ
  • দল হিসেবে নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ বøকেড জুলাই আহতদের
  • গেজেট প্রকাশের পরই দলটির নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত: সিইসি
  • সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রয়োজন ছিল: প্রেস সচিব 
আপডেট : ১২ মে ২০২৫, ০১:২৬ এএম

বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধে খুশি হলেও ‘অনেকটা নারাজ’ জাতীয় নাগরিক কমিটি (এনসিপি) ও ইসলামপন্থি দলের নেতাকর্মীরা। কার্যক্রম নয় চূড়ান্তভাবেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চায় তারা। ফলে ঘোষণার পরও গত শনিবার রাতে শাহবাগে আন্দোলন জিইয়ে রাখা হয়েছিল। গতকাল রবিবারও শাহবাগে জুলাই আন্দোলনে আহতদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। তাদের অন্য দাবির মধ্যে ছিল ‘আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে স্থায়ী নিষিদ্ধ করা।

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের আগে বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বক্তব্য এসেছে। তবে নিষিদ্ধের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেরিতে হলেও আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমরা আনন্দিত।’

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া গত শনিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক লিখেছেন, ‘বিচারিক প্রক্রিয়ায় চূড়ান্তভাবে নিষিদ্ধ হওয়াই অধিকতর গ্রহণযোগ্য। একই সঙ্গে তিনি শঙ্কা প্রকাশও করেছেন।’ তিনি বলেছেন, ‘নিষিদ্ধ হওয়ার পর গণহত্যাকারীরা সারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে।’ উপদেষ্টা আসিফ সবাইকে সতর্ক ও সজাগ থাকারও আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, ‘সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন ছিল।’

কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলসংক্রান্ত বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন গতকাল গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সরকারের গেজেট প্রকাশের পরই দলটির নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার। গত শনিবার রাতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল রবিবার এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে। এতে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কোনো রাজনৈতিক দল, এর অঙ্গ সংগঠন বা সমর্থকগোষ্ঠীর বিচার ও শাস্তি দিতে পারবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর ফলে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও শাস্তি দিতে পারবে ট্রাইব্যুনাল।

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে রাজনৈতিক দলের বিচারের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের সংশোধনীকে যুগোপযোগী উল্লেখ করেছে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখা।

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পর দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে গতকাল শাহবাগ ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহতরা। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে দেশের বিভিন্ন এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে শোকরানা ও আনন্দ মিছিল হয়েছে।

গত শুক্রবার বিকেল থেকে শনিবার সারাদিন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে গণজমায়েত ও ব্লকেড কর্মসূচি চলে। কর্মসূচিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ইনকিলাব মঞ্চ, জুলাই ঐক্যসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। শনিবার দিনভর উত্তাল পরিস্থিতির পর রাতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা হলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখী মার্চ করার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। এক ঘণ্টার আল্টিমেটামের পর আন্দোলনকারীরা শাহবাগের পাশে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের মোড়ে অবস্থান নেন।

গত শনিবার রাতে যমুনায় বিশেষ বৈঠকে বসে উপদেষ্টা পরিষদ। এতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ ও দলটির নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে ওই সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।

এর ধারাবাহিকতায় আইনের সংশোধনী এনে এ অধ্যাদেশ জারি করা হয়। সংশোধিত আইনে সংগঠন শব্দটির সংজ্ঞায়নে বলা হয়েছে, এ আইনের আওতায় সংগঠন বলতে যেকোনো রাজনৈতিক দলকেও বোঝাবে। পাশাপাশি দলের অধীন, সম্পর্কিত বা সংশ্লিষ্ট কোনো সংগঠন অথবা গোষ্ঠীকে বোঝাবে।

এতে বলা হয়, এই আইন বা প্রযোজ্য অন্য আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, যদি ট্রাইব্যুনালের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, কোনো সংগঠন এ আইনের ৩ ধারা উপধারা (২)-এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেছে, আদেশ দিয়েছে, চেষ্টা করেছে, সহায়তা করেছে, উসকানি দিয়েছে, মদদ দিয়েছে, ষড়যন্ত্র করেছে, সহযোগিতা করেছে অথবা অন্য যেকোনোভাবে সেই অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেছে, তবে সংগঠনটির কার্যক্রম স্থগিত বা নিষিদ্ধ করার, সংগঠনের নিষিদ্ধ ঘোষণার, এর নিবন্ধন বা লাইসেন্স স্থগিত অথবা বাতিল করার এবং এর সম্পত্তি জব্দ করার ক্ষমতা ট্রাইব্যুনালের থাকবে।

যুগোপযোগী সংশোধন বলছে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন

দলের বিচার ও শাস্তির বিধান রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধন করে গেজেট জারিকে যথোপযোগী উদ্যোগ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখা। গতকাল ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর (প্রশাসন) গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম এক ভিডিও বার্তায় বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধিত হয়েছে। এই সংশোধনীর পরে ট্রাইব্যুনালে ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনের বিরুদ্ধে তদন্ত, বিচারকার্য পরিচালনা এবং শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

তবে, এতদিন যে অবস্থায় ছিল, সে ক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সংগঠনের বিরুদ্ধে তদন্ত বা বিচার পরিচালনা করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা ছিল না। বর্তমানের সংশোধনীর পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংগঠনের বিরুদ্ধে শাস্তিদানের ক্ষমতা রাখা হয়েছে। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আমরা মনে করি, এটি যথোপযোগী উদ্যোগ।

তিনি আরও বলেন, যদিও বাংলাদেশে প্রচলিত অন্যান্য আইনেও সংগঠনের নিষিদ্ধ করা বা শাস্তি দেওয়ার বিধান আছে। তবুও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মতো একটি ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড আইন বা ট্রাইব্যুনালে সংগঠন বা কোনো ব্যক্তির বিচার যদি সম্পন্ন হয়ে থাকে, সেটি হবে মানুষের জন্য অ্যাকসেপ্টেবল। অতএব আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের যুগোপযোগী সংশোধনের জন্য আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।

আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ ব্লকেড জুলাই আহতদের

জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে স্থায়ী নিষিদ্ধ, জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন এবং আহতদের উন্নত চিকিৎসার দাবিতে শাহবাগ মোড় ব্লকেড করেছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আহতরা। গতকাল সকাল থেকে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে অবস্থান নেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আহতরা আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে নিষিদ্ধসহ তিন দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত এবং পুনর্বাসনেরও দাবি জানান তারা। এ সময় তারা তাদের চিকিৎসার নিশ্চয়তা দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘোষণার দাবি করেন। এ ছাড়া দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন এবং আজীবন চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবি তোলেন তারা। এসব দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার হুঁশিয়ারিও দেন তারা।

আহতরা অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে, এর আগে বা পরে কোনো যদি-কিন্তু থাকবে না। তারা আরও বলেন, আমাদের দুই হাজার ভাই শহীদ এবং ৩৫ হাজার আহত ভাই বিভিন্ন জায়গায় অবহেলিত ও নির্যাতিত। অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়েও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না করে সুশীলতা দেখায়। এখনো আওয়ামী লীগকে পূর্ণাঙ্গভাবে নিষিদ্ধ এ সরকার করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার সদিচ্ছা থাকলে গত আগস্টেই নিষিদ্ধ হয়ে যেত। জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রও জারি হয়ে যেত। শাহবাগে অবস্থান করতে গিয়ে ২০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।

এদিকে, ব্লকেড কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শাহবাগ মোড় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শাহবাগ মোড় অবরোধ থাকায় এর আশপাশের এলাকায় যানজট লক্ষ করা গেছে। সকাল থেকে সায়েন্সল্যাব, টিএসসি এবং বাংলা মোটরের দিকে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। যানবাহনগুলো বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা যায়।

সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ প্রয়োজন ছিল

জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রয়োজন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গতকাল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কী প্রতিক্রিয়া জানাবে- এমন প্রশ্ন উল্লেখ করে তার জবাবে শফিকুল আলম লেখেন, ‘আমার মনে হয় না, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় বিশ্ব বিলাপ করবে। জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য এই নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন ছিল।’

প্রেস সচিব লেখেন, ‘আমরা দেখেছি, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং মূল জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য এমনকি পশ্চিমা গণতন্ত্রেও রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, শুধু তাদের কার্যক্রম নয়। জার্মানি এবং ইতালি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে নাৎসি এবং ফ্যাসিস্ট দলগুলোকে নিষিদ্ধ করেছিল। স্পেন ও বেলজিয়ামেও কিছু রাজনৈতিক দলকে অবসানমূলক কার্যকলাপের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।’

জাতিসংঘের প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে তিনি লেখেন, ‘সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব, দলীয় কর্মীরা এবং সহযোগী সংগঠনগুলো মানবতাবিরোধী জঘন্য অপরাধে অংশগ্রহণ করেছিল। এই দল বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ব্যাপক ধ্বংস করেছে। নেতা এবং সমর্থকরা ব্যাংক লুট করেছে এবং বিদেশে বিপুল পরিমাণ তহবিল পাচার করেছে।’

শফিকুল আরও আলম লেখেন, ‘গণতান্ত্রিক বিশ্বে এমন কেউ নেই যে এমন নির্লজ্জ খুনি, গণতন্ত্রবিরোধী এবং দুর্নীতিগ্রস্ত দলের পক্ষে কথা বলবে। আওয়ামী লীগের কার্যকলাপের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমরা কোনো প্রতিকূল আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া আশা করি না।’

যুদ্ধাপরাধীদের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে: মাহফুজ আলম

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘একাত্তরের প্রশ্ন-মীমাংসা করতেই হবে। যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিস্তানপন্থা বাদ দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, মুজিববাদী বামদের ক্ষমা নেই। গত শনিবার রাত দেড়টার দিকে মাহফুজ আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে ‘দুটি কথা’ শিরোনামে এসব কথা বলেন।

বিচারিক প্রক্রিয়ায় চূড়ান্তভাবে নিষিদ্ধ হওয়াই স্থায়ী বন্দোবস্ত: আসিফ মাহমুদ

গণহত্যাকারীরা সারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। গত শনিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি। আওয়ামী লীগের বিচার প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, ‘বিচারিক প্রক্রিয়ায় চূড়ান্তভাবে নিষিদ্ধ হওয়াই অধিকতর গ্রহণযোগ্য ও স্থায়ী বন্দোবস্ত এবং তা করার জন্য ছাত্র-জনতার দাবি অনুযায়ী আইসিটি আইনে যাবতীয় সংশোধন করা হয়েছে।’ আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আরও লেখেন, ‘প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নিষিদ্ধ হওয়ার পর গণহত্যাকারীরা সারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে। সবাইকে সতর্ক ও সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’

ঢাকার বাইরে শোকরানা ও আনন্দ মিছিল : পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তে পঞ্চগড়ে শোকরানা ও আনন্দ মিছিল হয়েছে।

নাটোর প্রতিনিধি জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় শহরের মাদ্রাসা মোড়ে একটি মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কানাইখালী এলাকায় পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি জানান, আখাউড়ায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণের আয়োজন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি জানান, বিকেল সাড়ে ৫টায় সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শোকরানা মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাসস্ট্যান্ডে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত