১৯৮৯ সালে টেস্ট অভিষেকের প্রায় আড়াই বছর পর ১৯৯২ সালের অস্ট্রেলিয়া সফরে প্রথমবার ভারতের হয়ে চার নম্বরে ব্যাটিং করতে নামেন শচিন টেন্ডুলকার। সেই যে শুরু, এর পর থেকে কখনো চার নম্বরের জন্য বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান নিয়ে ভাবতে হয়নি দেশটিকে। ২০১৩ সালে ক্রিকেটঈশ্বর শচিন যখন অবসরে গেলেন ততদিনে তারকা তকমার সঙ্গে ভরসার নামও হয়ে উঠেছেন বিরাট কোহলি। গুরুর রেখে যাওয়া ২১ বছরের ব্যাটনটি গত ১২ বছর ধরে তিনিই সামলে এসেছেন। সম্প্রতি বিরাট কোহলির অবসর ঘোষণার মধ্য দিয়ে ৩৩ বছর পর এখন এই গুরুত্বপূর্ণ পজিশনের দায়িত্ব কে সামলাবেন- এই সংকটে পড়তে হচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে।
ভারতের হয়ে ২৭৫ ইনিংসে চার নম্বরে ব্যাটিং করেছেন শচিন টেন্ডুলকার। ৫৪.৪০ গড়ে ক্যারিয়ারের ৪৪টি সেঞ্চুরি ও ৫৮টি ফিফটি পেয়েছেন এ পজিশনেই ব্যাটিংয়ে নেমে। এর বাইরে সর্বোচ্চ ২৯ ইনিংসে তিনি ব্যাটিং করে পাঁচ নম্বরে। সেটিও কখনো নাইটওয়াচম্যান পরিস্থিতির বিবেচনায়। শচিন অধ্যায় শেষে ভারতীয় দলে চার নম্বরের বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব বর্তায় বিরাটের কাঁধে। ১৬০ ইনিংসে সেই দায়িত্ব সামলেছেন বিরাট। গড় ৫০.০৯, সেঞ্চুরি ২৬টি। এই তালিকায় বিরাটের পরের নামটি আজিঙ্কা রাহানের। মাত্র ১৫ ইনিংসে চারে ব্যাটিং করা রাহানের গড় ৪৪.৪২।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এই পজিশনের ব্যাটসম্যানকে নিয়ে কীভাবে সংকটে পড়তে পারে তা বুঝতে সবশেষ ঘরের মাটিতে হয়ে যাওয়া ইংল্যান্ড সিরিজটি বড় উদাহরণ। সেই সিরিজে চার নম্বরে চারজন ব্যাটসম্যানকে খেলিয়েছিল ভারত। তারা হলেন- লোকেশ রাহুল, শ্রেয়াস আইয়ার, রজত পাতিদার ও দেবদুত পাড়িক্কাল। বিরাট পরবর্তী ভারতীয় যুগের পরের অ্যাসাইনমেন্টও এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই, ইংলিশ কন্ডিশনে। ওই সিরিজের জন্য দল এখনো ঘোষণা করেনি বিসিসিআই। তবে গ্লাভসের দায়িত্ব সামলালে রাহুলের চারে ব্যাটিং করার সম্ভাবনা কম। রোহিত শর্মা না থাকায় যশস্বী জয়সওয়ালের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করতে দেখা যেতে পারে শুবমান গিলকে। সেক্ষেত্রে শুধু চার নয়, তিন নম্বরের জন্যও নতুন কাউকে প্রয়োজন হবে ভারতের। সরফরাজ খান, শ্রেয়াস আইয়ার, অভিমন্যু ইশ্বরনরা হতে পারেন এ ক্ষেত্রে বিকল্প। তবে শচিন-বিরাটের রেখে যাওয়া ৩৩ বছরের শূন্যতা পূরণ খুব যে সহজ হবে না, তা বলে দেওয়াই যায়।