শারজায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ আগে ব্যাট করে তুলেছে ৫ উইকেটে ২০৫ রান। তানজিদ হাসান তামিমের ৩৩ বলে ৫৯ রানের ইনিংসের পর শেষ দিকে তাওহীদ হৃদয়ের ২৪ বলে ৪৫ রানের ইনিংসে বাংলাদেশ দুইশ রান পার করে। টি-টোয়েন্টিতে এ নিয়ে সপ্তমবার দুইশ বা তার বেশি রান করল বাংলাদেশ।
আগের ম্যাচের অভিজ্ঞতা থেকেই বোধহয় এবারও টস জিতে বোলিং নেন আমিরাত অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিম। প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি করা পারভেজ হোসেন ইমন চোটের কারণে খেলছেন না, আইপিএল খেলতে চলে গেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। প্রথম টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং ও বোলিংয়ের সেরা দুই পারফরমারকে ছাড়াই ৪ পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজায় বাংলাদেশ। প্রত্যাবর্তন নাজমুল হোসেন শান্তর, বাইরে সহ-অধিনায়ক শেখ মেহেদী হাসান। সুযোগ হয়েছে রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানার, একাদশে এসেছেন শরিফুল ইসলামও। লিটন দাসকে তিনে খেলানোর কথা বলেছিলেন প্রধান নির্বাচক, এক ম্যাচ পরই লিটন চলে গেলেন উদ্বোধনে। তবে খারাপ করেননি, দুঃসময় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা ছিল। ৩২ বলে করেছেন ৪০ রান, মোটে ৩ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কা। কিছুটা নিজের জন্যও বোধহয় খেলছিলেন, রান না পেলে সমালোচনা যে আরও বাড়বে! ভাগ্যের অনেক আশীর্বাদ পেয়েও হাফসেঞ্চুরি হলো না, এটাই হয়তো তার আক্ষেপ। পাওয়ার প্লেতে ৬৬ রান, ৪.৫ ওভারে দলীয় ৫০ পূর্ণ, ৯.১ ওভার স্থায়ী ৯০ রানের উদ্বোধনী জুটি; প্রশংসা করার অনেক কিছুই আছে। একই সঙ্গে শেষ দিকের ওভারে কাক্সিক্ষত হারে রান না তোলার সমালোচনাও আসবে। জাওয়াদউল্লাহর ১৭তম ওভারে বাংলাদেশ নিয়েছে মাত্র ৫ রান, সগীর খানের করা ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে হৃদয় আউট হওয়ার পর কোনো বাউন্ডারি আসেনি। শামীম হোসেন ৩টা ডেলিভারি খেলে একটাও বাউন্ডারি মারতে পারলেন না, তাহলে দলে তার ভূমিকাটা কী? একই প্রশ্ন জাকের আলী অনিকের বেলাতেও, ৬, ৪, ৬ এবং আউট; এই হচ্ছে ক্রম। জাকের কি শুধু এতটুকুই করবেন, শেষটা করে আসবেন না? বড় প্রতিপক্ষের সঙ্গে এই ভুলগুলো রয়ে যায় বলেই তো সাফল্য ধরা দেয় না।
ইমনের অভাব ভুলিয়েছেন তানজিদ তামিম। ২৫ বলে হাফসেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন, ৩৩ বলে ৫৯ রান করে আউট হয়েছেন ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ফিল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে। হৃদয় কিছুটা দুর্ভাগা, হাফসেঞ্চুরিটা পেলেন না। হেলিকপ্টার শট, নো লুক শট...অনেক দর্শনীয় শটই আসছিল তার উইলো থেকে। সগীর খানের বল আকাশে তুলে দিয়ে তার হাতেই ক্যাচ দিয়েছেন ৪৫ রান করে। ২০ ওভারে বাংলাদেশ করেছে ৫ উইকেটে ২০৫ রান, শারজার মাঠে যে রানটাকে নিরাপদ মনে করার কোনো কারণ নেই।
গোটা বাংলাদেশের ইনিংসে ৬টা ছক্কা, আগের ম্যাচে ইমন একাই মেরেছিলেন ৯টা ছক্কা। ইমনের সেঞ্চুরির সঙ্গে সেদিন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছিল ২০ রান। এবার ছক্কা কম, তবে একাধিক কুড়ি থেকে চল্লিশের ঘরের ইনিংস। তাতে দলীয় সংগ্রহটা হয়েছে প্রথম ম্যাচের চেয়ে বেশি। ইমনের ছক্কাবৃষ্টির সঙ্গে এই ম্যাচের মতো বাকিদের অবদান যোগ হলেই তো নিখুঁত একটা ইনিংস হয়ে যায় বাংলাদেশের!