কুমিল্লা বরুড়া উপজেলা গালিমপুর ইউনিয়নের ঘোষ্পা গ্রামে মাদকাসক্তি বেড়ে যাওয়ায় এলাকাবাসী সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে মাদক নির্মূলে ঐক্যবদ্ধ। শুক্রবার (৬ জুন) থেকে টানা এক সপ্তাহে মাদক নির্মূল কর্মসূচি বৈঠক চলছে।
সোমবার (৯ জুন) কর্মসূচি চতুর্থ দিন। প্রতিদিন রাতে ঘোষ্পা হাই স্কুল সংলগ্ন মাঠে মাদক নির্মূল বৈঠক আয়োজন করে গ্রামবাসী। আগামী তিনদিন বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা মাদক নির্মূল বৈঠক আয়োজন করা হয়েছে। এক সপ্তাহে কর্মসূচি শেষ দিনে পরবর্তী এজেন্ডা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে।
মাদক নির্মূল বৈঠকে এলাকাবাসী কীভাবে মাদক প্রতিরোধ করা যায় সে বিষয়ে মতামত পেশ, প্রাথমিকভাবে মাদকসেবী, মাদক কারবারি তালিকা প্রণয়ন ও তাদের সামনে উপস্থিত করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে হস্তান্তর, তথ্য প্রমাণের মাধ্যমে প্রাথমিক শাস্তি প্রদান ও উপযুক্ত প্রমাণ না পেলে ছেড়ে দেওয়া। মাদক নির্মূলে সবাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়।
এক সপ্তাহ কর্মসূচি চতুর্থ দিন পর্যন্ত গ্রামে ৩০ জন মাদকসেবী ও ৪ জন ডিলার (ব্যবসায়ি) পাওয়া গিয়েছে। ৩ জন মাদকসেবীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তোলে দেওয়া হয়। কয়েকজনকে শাস্তি প্রদান এবং কয়েকজনকে তথ্য প্রমাণ না পাওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
উক্ত মাদক নির্মূল বৈঠকে আলোচনা উঠে এসেছে মাদক নির্মূল, কমিটি গঠন, মাসিক বৈঠক, পুরস্কার প্রদান, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, মাদকসেবী ও কারবারিদের শাস্তির আওতায় আনা, তদারকি করা, গ্রামে টহল প্রদান করা ও রাত ১২টার আগে সকল দোকানপাট বন্ধ করা বিষয়।
অনুষ্ঠানে মাদকের বিরুদ্ধে জনগণের কাছ থেকে গণ স্বাক্ষর নেওয়া হয়। ভবিষ্যতে ঘোষ্পা গ্রামের একটি শিশু যেন মাদক ছোয়া না পায় সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
উক্ত মাদক নির্মূল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মাস্টার কামাল হোসেন, মাস্টার আ. ওহাব, মাস্টার আমিনুল ইসলাম, মাস্টার আবুল কালাম আজাদ, মাস্টার মিজানুর রহমান, মাস্টার জাহাঙ্গীর আলম, মাস্টার সফিকুর রহমান, বরুড়া উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক বাবুল হোসেন, সর্দার আ. কুদ্দুস, মোস্তফা জামান মানিক, কামরুল ইসলাম, শাহজাহান হোসেন, শামীম খান, মাহবুবুর রহমান, জাকির হোসেন ও মহিন উদ্দিনসহ আরও অনেকে।
ঘোষ্পা গ্রামের মাদক নির্মূলের সমন্বয়কারী, ঘোষ্পা ব্লাড ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও গালিমপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মানিক বলেন, ঘোষ্পা গ্রামকে আদর্শ গ্রাম গড়তে তুলতে হলে মাদক মুক্ত করতে হবে। এছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। সুস্থ-সুন্দর পরিবেশই আগামী প্রজন্মের জন্য সঠিক সমাধান।