নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়াতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ছাত্রদল ও যুবদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও গোলাগুলি ঘটনা ঘটেছে। এ সময় মামুন মিয়া নামে এক মুদি দোকানদার গুলিবিদ্ধ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সাব্বির হোসেন খোকা নামে ছাত্রলীগ নেতাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রূপগঞ্জের মাঝিপাড়া এলাকায় ঘটে এ ঘটনা। মঙ্গলবার মধ্যরাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ মামুন মিয়া মৃত্যুবরণ করেন। মামুন মিয়ার নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি লিয়াকত আলী। নিহত মামুন মিয়া মাঝিপাড়া এলাকার আব্দুল মন্নাফের ছেলে।
মামুন মিয়ার মৃত্যুর সংবাদে বিক্ষুব্ধ স্বজনরা আসামিপক্ষের লোকজনের বাড়ি ঘরে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিহতের ঘটনায় এলাকায় আবারও ওই গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। এতে দুই গ্রুপের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জাহিদুল ইসলাম বাবুকে ছাত্রদল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুধবার সকালে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভুলতা ইউনিয়ন যুবদল নেতা বাদল মিযার সঙ্গে ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম বাবুর মাঝে এলাকার নানা আধিপত্য নিয়ে বিরোধ রয়েছে। মাঝিপাড়া এলাকার কবির মিয়ার ছেলে সাব্বির হোসেন খোকা নিষিদ্ধ সংগঠন ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বর্তমানে জাহিদুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে সাব্বির হোসেন খোকা চলাফেরা করতেন। মঙ্গলবার বিকেলে যুবদল নেতা বাদল মিয়া ও তার লোকজন লাঠি সোটা নিয়ে সাব্বির হোসেন খোকাকে নিজ বাড়ি থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে এসে নির্যাতন চালান এবং হাত পা ভেঙে দেন। পরে জাহিদুল ইসলাম ও তার লোকজন লাঠি সোটা নিয়ে সাব্বির হোসেন খোকাকে উদ্ধার করতে যান। পরে বাদল মিয়ার লোকজনের সঙ্গে জাহিদুল ইসলাম বাবুল লোকজনের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় বাদল মিয়ার ভাই মুদি দোকানদার মামুন মিয়ার মাথায় গুলিবিদ্ধ হন।
এ বিষয়ে যুবদল নেতা বাদল মিয়া বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী সাব্বির হোসেন খোকাকে এলাকাবাসী আটক করে গণপিটুনি দেয়। আর সাব্বির খোকাকে ছাড়িয়ে নিতে জাহিদুল ইসলাম বাবু এলাকাবাসীর ওপর এলোপাথাড়িভাবে গুলি ছোঁড়েন। তার ছোঁড়া গুলিতে বাদলের ভাই মামুন মিয়া মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন।
জাহিদুল ইসলাম বাবু বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের রাজনীতি করায় এবং অপর সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর পক্ষে কাজ না করায় আমাকে এ ঘটনায় ফাঁসানো হচ্ছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম বলেন, গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনার সংবাদ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল পুলিশ পাঠানো হয়। ঘটনাস্থল পুলিশ মোতায়ন ও বর্তমানে পরিস্থিতি সাভাবিক রয়েছে। মামুন মিয়া নামে ব্যবসায় নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।