যুক্তরাষ্ট্রের হামলার বদলা নিতে কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইরানের সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজের বরাতে একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কোর (আইআরজিসি) এ হামলা চালিয়েছে। কাতার ও ইরাকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
এ হামলার আগেই কাতারে মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে সতর্কবার্তা দেয় দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। এরপর সাময়িকভাবে দেশটির আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করে কাতার। এ ছাড়া কাতারের বেশ কিছু স্কুল মঙ্গলবার বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, কাতারের আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে ইরান থেকে ছোড়া স্বল্প ও মধ্যমপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।
একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত এ হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিকের হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি এখনো পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
এর আগে আইআরজিসি জানায়, কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ বিমান ঘাঁটি লক্ষ্য করে তারা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। তাসনিমের বরাত দিয়ে আলজাজিরার খবরে বলা হয়, হামলা চালানোর পর ইরানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পরিষদ এক বিবৃতিতে বলছে, এ হামলা বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ কাতার বা তার সম্মানিত জনগণের জন্য কোনো হুমকি তৈরি করে না।
ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, এ হামলা কাতারের সার্বভৌমত্ব, আকাশসীমা এবং জাতিসংঘ সনদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি আরও বলেন, কাতার রাষ্ট্র হিসেবে, এই প্রকাশ্য আগ্রাসনের জবাবে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় সরাসরি জবাব দেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে।
বাহরাইনে বাজল সাইরেন, জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার নির্দেশ : বাহরাইনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশ জুড়ে সাইরেন বাজানো হয়েছে এবং বাসিন্দাদের ‘নিকটস্থ নিরাপদ স্থানে’ সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, এক্সে (সাবেক টুইটার) একাধিক পোস্টে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিপদ কেটে না যাওয়া পর্যন্ত জনগণকে কোনো ভবন বা আচ্ছাদিত স্থানে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। তবে এই বিপদ কী ধরনের, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়ে বলেছে, তীব্র বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলে যেন সবাই যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন করে।
এর আগে ইরান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাবে তারা প্রতিশোধ নিতে পারে।
কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রে ঘাঁটি ও সামরিক উপস্থিতি রয়েছে। কাতারে আল উদেইদ নামের বিমান ঘাঁটিতে প্রায় ১০ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।