শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

নেশার টাকা জোগাড়ে দেড় মাস বয়সী সন্তানকে বিক্রি, উদ্ধার করল পুলিশ

আপডেট : ২৪ জুন ২০২৫, ০৩:২৮ পিএম

মাদকের টাকা জোগাড়ে দেড় মাস বয়সী এক পুত্র সন্তানকে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে শরীয়তপুর সদরের চরপালং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে অভিযোগ পেয়ে সদরের পালং মডেল থানার পুলিশ রাতেই নবজাতককে উদ্ধার করে তার দাদা-দাদির হাতে তুলে দেয়।

সন্তান বিক্রি করা বাবার নাম ইব্রাহীম হাওলাদার। তিনি নড়িয়া উপজেলার ফতেজঙ্গপুর এলাকার শওকত হাওলাদারের ছেলে। পরিবার নিয়ে শরীয়তপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চরপালং এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। পুলিশের দাবি, ইব্রাহীম মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পরেছিলেন। ওই ঋণের টাকা পরিশোধ করতে শিশুটিকে ৩১ হাজার টাকায় প্রতিবেশী ইকবাল হোসেন ও মুক্তা দম্পতির কাছে বিক্রি করেন।

পালং মডেল থানা সূত্র জানায়, ইব্রাহীম শরীয়তপুর শহরের একটি ওয়ার্কশপের শ্রমিক। স্ত্রী শ্রাবণী ও দুই বছরের এক মেয়ে এবং দেড় মাস বয়সী ছেলে নিয়ে তার সংস্কার। কিন্তু ওই দম্পতি বিভিন্ন ভাবে মাদক বিক্রি ও সেবনের সাথে জড়িয়ে পরে। সোমবার দুপুরে তাদের দেড় মাস বয়সী শিশু পুত্রকে প্রতিবেশী ইকবাল হোসেন ও মুক্তা আক্তার দম্পতির কাছে বিক্রি করে দেন। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে পালং মডেল থানার পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় শিশুকে উদ্ধার করে। ওই সময় ইব্রাহীম ও শ্রাবণী দম্পতিকে আটক করা হয়। রাতে শিশুটির দাদা শওকত হাওলাদার ও দাদী ঝর্না বেগম থানায় মুচলেকা দিয়ে তাদের ছেলে ও পুত্রবধুকে ছাড়িয়ে আনে।

ইব্রাহীমের বাবা শওকত হাওলাদার বলেন, একজন বাবার সন্তান মাদক সেবনকারী হলে ওই বাবার দুঃখ-কষ্টের শেষ থাকে না। ওর যন্ত্রণায় আমরা অতীষ্ট ছিলাম। সে তার সন্তানকে বিক্রি করে দিবে কল্পনাও করতে পারিনি।

ইকবাল হোসেন বলেন, আমার তিন কন্যা সন্তান। স্ত্রী ছেলে সন্তানের জন্য আকুতি জানাত। ইব্রাহীম ও তার স্ত্রী তাদের ছেলেকে লালন-পালনের জন্য আমাদের কাছে দিতে রাজি হলে আমরা কিছু টাকা দিয়ে ওই শিশুকে নিই। পরে স্থানীয়দের বাধার মুখে পুলিশের হাতে শিশুটিকে তুলে দিয়েছি।

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, একটি শিশুকে বাবা-মা বিক্রি করে দিয়েছে এমন অভিযোগ পাই। সন্ধ্যার দিকে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ তার বাবা-মাকে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাদের অভিভাবকরা মুচলেকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়েছে। ওই শিশুর বাবা মাদকাসক্ত। তাই তিনি এমন কাজ করেছেন বলে পরিবার থেকে জানানো হয়েছে। কোন পক্ষের লিখিত অভিযোগ না থাকায় মামলা হয়নি।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত