বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

মুরাদনগরে তিন জনকে হত্যার ঘটনায় মামলা, প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান

আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৫:১১ পিএম

কুমিল্লার মুরাদনগরে মা ও দুই সন্তানকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ৩৯ ঘণ্টা পর থানায় মামলা হয়েছে। এতে ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে দুজনকে আটক করা হয়েছে।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে স্থানীয় আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লালকে। একই সঙ্গে ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বাচ্চু মিয়া ও স্থানীয় ব্যবসায়ী বাছির উদ্দিনসহ অনেকে রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে মুরাদনগরের কড়ইবাড়ি গ্রামে খলিলুর রহমান ওরফে জুয়েলের স্ত্রী রোকসানা বেগম (৫৩), ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকিকে (২৯) কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। গুরুতর আহত হন রোকসানার আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৭)। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শুক্রবার রাতে নিহত রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার বাদী হয়ে বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। রাত ১২টার দিকে সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে পুলিশ।

এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, মামলার কপি এখনো আদালতে পৌঁছায়নি। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তাই এখনই তাদের নাম প্রকাশ করছি না। তবে তিনি জানান, অভিযানে দুজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।

স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ বলছে, নিহত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার অভিযোগ ছিল। তাদের পরিবারের নারী-পুরুষ মিলিয়ে একাধিক সদস্যের নামে রয়েছে মাদক সংক্রান্ত মামলা। তবে আগে কখনো এলাকাবাসী তাদের ওপর হামলা করেনি।
একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করেন, ১ জুলাই এক শিক্ষকের ফোন চুরির ঘটনা কেন্দ্র করে একটি চক্র এলাকাবাসীকে উত্তেজিত করে। পরে পরিকল্পিতভাবে রোকসানার পরিবারের ওপর হামলা চালানো হয়।

নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার বলেন, এ ঘটনার পেছনে প্রধান ইন্ধনদাতা ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল ও মেম্বার বাচ্চু মিয়া। আর হামলার নেতৃত্ব দেয় বাছির উদ্দিন। ঘটনার পর থেকেই বাচ্চু ও বাছির পলাতক। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ।

এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বরং ঘটনার আগের দিন আমি স্থানীয় যুবকদের নিয়ে সভা করে সবাইকে বলেছি কেউ যেন নিজের হাতে আইন তুলে না নেয়।

ওসি মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। তবে আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অনেককে শনাক্ত করেছি। অভিযান চলছে। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

 

 

 

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত