স্ত্রীর কবরের পাশেই চির নিদ্রায় শায়িত হলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বইবন্ধু পলান সরকার।
শনিবার সকালে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। সকাল ১০টায় রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসায় হারুনুর রশিদ শাহ দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে পলান সরকারের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পলান সরকার এই স্কুলের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন।
জানাজার নামাজে ইমামতি করেন বাঘার বাউসা পূর্বপাড়া জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মোহাম্মদ আবুল বাশার। রাজশাহী জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের, রাজশাহী পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন রেজা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাবা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শামসুদ্দীন, সরের হাট এতিমখানার পরিচালক সাদা মনের মানুষ শামসুদ্দিন সরকার, সদ্য নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দিন লাবলু, বাঘা পৌরসভার মেয়র আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক মেয়র আক্কাস আলীসহ জানাজায় সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।
পলান সরকার ১৯২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম হারেজ উদ্দিন। তবে আশপাশের এলাকাসহ সারা দেশেই তার পরিচিতি পলান সরকার নামে। জন্মের মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় তার বাবা মারা যান। আর্থিক টানাপোড়েনে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময়ই লেখাপড়ায় ইতি টানতে হয় তাকে।
গত বছরের ২১ ডিসেম্বর পলান সরকারের স্ত্রী রাহেলা বেগম (৮৫) মারা যান। গ্রামে গ্রামে ঘুরে ছোট-বড় সবার দোরগোড়ায় বই হাতে পৌঁছে দিতেন পলান সরকার। বড়িতে বাড়িতে বই দিয়ে, পড়া শেষে আবারো নিজে গিয়ে বই ফিরিয়ে আনতেন। ২০০৭ সালে সরকারিভাবে তার বাড়িতে একটি পাঠাগার করে দেওয়া হয়। ২০১১ সালে তিনি ‘একুশে পদক’ পান।
শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। পলান সরকার বার্ধক্যজনিত রোগে শয্যাশায়ী ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি ছয় ছেলে ও তিন মেয়ে রেখে গেছেন।