মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

ভারত-পাকিস্তান নিয়ে কৌশলী চীন

আপডেট : ০২ মার্চ ২০১৯, ১১:০৬ পিএম

কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার চলমান সংকটে জড়িয়ে পড়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে দুই রাষ্ট্রের প্রতিবেশী ও বৈশ্বিক পরাশক্তি চীন। পাকিস্তান ভারতীয় দুটি বিমান ভূপাতিত করা ও পাইলটকে আটকের খবর জানানোর পর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ পর্যায়ে পৌঁছায়। এর আগে পাকিস্তানে সন্ত্রাসীদের ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালানোর কথা জানায় ভারত। এর মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের পর প্রথমবারের মতো কাশ্মীরের কার্যত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) অতিক্রম করে পাকিস্তানে এ ধরনের হামলা চালায় দেশটি।

এমন বাস্তবতায় দ্বন্দ্বে চীনের জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি শুধু কাশ্মীরের সঙ্গে তাদের সীমান্ত থাকার সঙ্গে জড়িত নয়; পাকিস্তান ও ভারতের সঙ্গে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ককেও রাখতে হবে বিবেচনায়। পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক, কূটনীতিক ও সামরিক সম্পর্ক রয়েছে চীনের। এসব কারণে এ অঞ্চলে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় মিত্র মনে করা হয় চীনকে। মুদ্রার অপর পিঠ হলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘ বাণিজ্যযুদ্ধে চীনের বিকল্প ব্যবসায়িক সহযোগী খোঁজা। আর এ কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী উদীয়মান শক্তি ভারত ও তার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সম্পর্ক পুনস্থাপন করতে শুরু করেছে চীন। এর নমুনা হলো গত বছর চীনে মোদির দুবার সফরে যাওয়া।

চলতি সপ্তাহে পাকিস্তান ও ভারতকে ‘সংযত আচরণ এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার’ আহ্বান জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত বুধবার গভীর রাতে জরুরি ফোনে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইকে ভারতের সঙ্গে চলমান পরিস্থিতিতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। জবাবে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ‘সব দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে শ্রদ্ধা করা উচিত এবং চীন এমন কোনো কর্মকাণ্ড দেখতে চায় না, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের রীতি লঙ্ঘন করে।’ এ বিষয়ে এসওএএস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের চায়না ইনস্টিটিউটের পরিচালক স্টিভ সাং সিএনএনকে বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বড় আকার ধারণ করলে কোনো পক্ষে থেকে লাভ নেই চীনের। তিনি বলেন,‘পাকিস্তান নিয়ে ব্যর্থ হওয়ার ভার বইতে পারবে না চীন। তবে একই সময়ে আমি মনে করি না, এ ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায় চীন।’

বিশ্লেষকদের মতে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রতি অতি সমর্থন দেখাতে চায় না চীন। এর মধ্য দিয়ে ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মোক্ষম অস্ত্র বানানো প্রতিহত করতে চায় পেইচিং। চীনের জন্য আরেকটি সমস্যা হলো, কাশ্মীরে ভারতের সন্ত্রাসীদের ঘাঁটিতে হামলা চালানোর দাবি। কারণ নিজেদের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ শিনজিয়াংয়েও সন্ত্রাসী নিধনের কথা বলে সংখ্যাগরিষ্ঠ উইঘুর মুসলিমদের গণবন্দিশালায় ভরছে চীন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত